পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমালোচনা বৈজ্ঞানিকী । ঐী জগদীনন্দ রায় প্রণীত । জগদানন্দ বাবু বঙ্গভাষার একজন লব্ধপ্রতিষ্ঠ লেখক । সম্প্রতি তিনি তাহার কতকগুলি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ বৈজ্ঞানিক নাম দিয়া পুস্তকাকারে প্রকাশিত করিয়াছেন। প্রবন্ধগুলি পূৰ্ব্বে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে মাসিক পত্রে প্রকাশিত হইয়াছিল। ইহাদের বিষয়ও নানাবিধ,— যথা দেহশক্র ও দেহমিত্র, বংশের উন্নতি বিধান, জৈব রসায়নের উন্নতি, আধুনিক ভূতত্ব, সৌরকলঙ্ক, আলোকের চাপ ইত্যাদি । পাঠক দেখিতেছেন একখানি ক্ষুদ্র পুস্তকের মধ্যে পদার্থবিদ্য, রসায়নবিদ্যা, জীবতত্ত্ব, সমাজতত্ত্ব প্রভূতি বিজ্ঞানের নানা শাখার অালোচন করা হইয়ছে। কাজেই একটা দোষ দাড়াইয়াছে এই যে কোনও বিষয়ই ভাল করিয়া, বিস্তারিত ভাবে, বলা হয় নাই । ইহাও স্বীকার্য্য যে লেখক তাহার প্রাঞ্জল, হৃদয়গ্রাহী ভাষার সাহায্যে অবৈজ্ঞানিক পাঠকের মনে বিজ্ঞানের কয়েকটী চিন্তী প্রণালীর আভাস দিতে সক্ষম হইয়াছেন। যতদিন পর্য্যন্ত বঙ্গভাষীয় রীতিমত বিজ্ঞানালোচন৷ আরম্ভ ন হয় ততদিন আমাদের এইরূপ মোটামুটি রকমের বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধেই সস্তুষ্ট থাকিতে হইবে । অীর একটা দোষ দেখিতেছি লেখক স্থানে স্থানে বিজ্ঞানের অতি দুরূহ সমস্তার অবতারণা করিয়াছেন। যেমন আলোকের চাপ। আমরা একজন পদার্থবিদ্যার এম, এস সি, ক্লাসের ছাত্রকে প্রশ্ন করিয়া দেখিলাম সেও এ বিষয়ে ভাল বুঝে না। কাজেই অবৈজ্ঞানিক পাঠক যে ইহার কি বুঝিবেন তাহ বলিতে পারি না। দুই একটী ক্রটিও আমাদের চক্ষে পড়িয়ছে—আশা করি দ্বিতীয় সংস্করণে সেগুলি দূরীকৃত হইবে। Electrolytic Dissociations; $45. Coio কেবল Clausius সাহেবের নামোল্লেখ করিয়াছেন । কিন্তু Clausius এই সিদ্ধান্তটার সুত্রপাত করিয়াছিলেন তবে মূল্য এক টাকা । মাত্র, স্কাণ্ডিনেভিয়াবাসী পণ্ডিত এহিনিয়ন্সই (Arrhinius) প্রকৃত প্রস্তাবে ইহাকে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছেন। সেইরূপ বংশের উন্নতিবিধান বিষয়ে লিখিবীর সময় কেবল মেণ্ডেলের নাম করিয়াছেন কিন্তু এই বিজ্ঞানের পিতৃস্থানীয় পণ্ডিত গ্যান্টনের নাম করিতে ভুলিয়া গিয়াছেন । যে কয়টা প্রবন্ধ আছে তন্মধ্যে বংশের উন্নতিবিধান নামক প্রবন্ধটাই আমাদের বিবেচনায় সৰ্ব্বাপেক্ষ প্রয়োজনীয় কেন না অন্ত প্রবন্ধগুলি পড়িয়া পাঠকের জ্ঞানবৃদ্ধি হইতে পারে কিন্তু সে জ্ঞান তঁহীর সাধারণ জীবনযাত্রীর বিশেষ কোনও সহাযত কবিতে পরিবে ন! । অপরদিকে বংশের উন্নতি বিধান সম্বন্ধে বর্তমানকালের বৈজ্ঞানিকগণের সিদ্ধান্তগুলি জনা থাকিলে বিবাহে পাত্র ও পীরা নিৰ্ব্বাচন করিবার পক্ষে যথেষ্ট সুবিধ! হইবে । আরও বোধ হয় ইউরোপ অপেক্ষ আমাদের দেশেই বিজ্ঞানের এই শাখাটীর আলোচনা করিবার অধিকতর সুযোগ আছে কেননা এদেশে যেরূপ কুলগ্রন্থ সমুহে বংশ-বিবরণ পাওয়া যায় ইউরোপে সেরূপ পাওয়া কঠিন। এইজন্য মনে হয় লেখক এই বিষয়টা আরও একটু বিশদ ভাবে বিবৃত করিলে ভাল করিতেন। এই প্রবন্ধের অন্তর্গত একটা কথায় লেখকের সহিত আমি একমত হইতে পারিলাম মা ! যে সকল ব্যক্তি এই পদ্ধতি অনুসারে সামাজিক উন্নতি বিধান করিতে চেষ্টা করিতেছেন লেখক তাহাদিগকে ভ্রান্ত বলিয়া বিবেচনা করেন । তিনি বলেন ইহাতে নরনারীকে পশুবৎ পালন কর হইবে । কিন্তু ধীর ভাবে সমুদায় Eugenics শাস্ত্র অধ্যয়ন করিলে এমন মনে হয় না যে তদ্বার দম্পত্য প্রেমের কোনও ক্ষতি হইবে। বস্তুতঃ আমি একটা প্রবন্ধে দেখইেতে চেষ্টা করিয়াছি যে মনুপ্রচারিত বিবাহ-ব্যবস্থা মুলতঃ উপরই প্রতিষ্ঠিত । (১) Eugenics q3 (*) See my articles on Hindu Eugenics in Hindu Review, May and June 1913.