স্রোতের ফুল ☆ ( ०१ ) বিপিন যখন মহিলাদের পাঠসভা আরম্ভ করিয়া দিয়াছিল, নবকিশোর ও তখন নিশ্চিন্ত ছিল না। সে মথুরাপুরে পিতার টােলটিকে কেন্দ্র করিয়া মণ্ডলে মণ্ডলে পাঠশালা প্রতিষ্ঠা করিতেছিল। তাহার পিতার টোলের পুরাতন ছাত্র ছাড়াও তাহার বিদ্যার থ্যাতি শুনিয়া অনেক নুতন ছাত্র ভৰ্ত্তি হইতে লাগিল। তাহদের কেহ ব্যাকরণ, কেহ স্মৃতি, কেহ বা বেদান্ত, এমনি এক-একটি মাত্র বিষয় পড়িবার সঙ্কল্প করিয়া আসিয়াছে । নবকিশোর তাহাদিগকে বলিল—দেখ, আমার টোলে কেবলমাত্র একটি বিষয় কেউ শিখবে না। মানুষের জ্ঞান বহুমুখ না হলে তার চিন্তাশক্তি সজীব হয় না, সমস্ত জগৎব্যাপারের সঙ্গে তার যোগ হয় না । আমার টোলে প্রথমে নিজের মাতৃভাষা বাংলা খুব ভালো করে শিখে তার প্রধান প্রধান বইগুলি পড়ে ফেলতে হবে ; সঙ্গে সঙ্গে বাংলাতেই অল্প গণিত, ভূগোল, জগতের এবং বিশেষ করে” ভারতের মোটামুটি ইতিহাস, স্থল স্থল বিজ্ঞানতত্ত্ব, এবং ইংরেজি ভাষাটাও শিখতে হবে। তার সঙ্গে প্রধান ভাবে শিখতে হবে সংস্কৃত गरिश ७ वltरुब्र१। ७हे-जकल विषञ्च মোটামুটি শেখা হলে ছাত্রের ইচ্ছামত সে ইংরেজিতে বা সংস্কৃতে বিশেষ বিষয়ে পাণ্ডিত্য লাভ করতে পারবে। যে সংস্কৃত জোতিষ পড়তে চাইবে, তাকে সেই সঙ্গে ইংরেজি এষ্ট্রনমিও পড়তে হবে ; ভারতীয় ষড়দর্শনের সঙ্গে যুরোপীয় দর্শনও আয়ত্ত করতে হবে ; ংস্কৃত সাহিত্যের সঙ্গে সঙ্গে যুরোপীয় একাধিক ভাষারও সাহিত্যের পরিচয় লাভ করতে হবে। এ যে না করবে সে অামার টোল থেকে উপাধি পাবে না । অভিরাম নামক একজন ছাত্র বিস্ময়ে চক্ষু বিস্ফারিত করিয়া টিকি নাড়িয়া বলিল —আজ্ঞে, তা হলে এ যে একেবারে স্কুল হবে । স্লেচ্ছ রকমেই যদি শিখৰ তবে টোলে এলেম কেন ? নবকিশোর গম্ভীর ভাবে বলিল-আমার টোল এই রকম ম্লেচ্ছ ধরণেরই হবে। যেসব ছাত্র শিক্ষার জ্ঞানের জাতিবিচার করে তাদের জন্তে আমার এ টোল নয় । তার স্বচ্ছন্দে বিদায় নিয়ে নিবারণ মুখুয্যের টোলে যেতে পারে। ইছা শুনিয়া সকল ছাত্রই নীরব হইয়া রছিল। নবকিশোর বলিতে লাগিল—শিক্ষা শেষ করে প্রত্যেক ছাত্রকে আমায় গুরুদক্ষিণ দিতে হবে, এবং সেজন্তে ভৰ্ত্তি হবার সময়েই একটা অঙ্গীকারপত্রে স্বাক্ষর করে দিতে হবে । অভিএ:ম ভয়বিস্ফারিত দৃষ্টিতে নবকিশোরের দিকে চাহিয়া বলিল-আজ্ঞে, এ ক্ত বড় কঠিন কথা । আপনার দাবি যদি
পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২১.djvu/২৩১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।