৩৮শ বর্ষ, দ্বাদশ সংখ্যা : এইরূপে সকলে পরস্পরে বলাবলি করিতেছিলেন, বঙ্কিমচন্দ্র এই ভৎসনাতে মৃদ্ধ মৃদ্ধ হাসিতেছিলেন, কবিবর মস্তক নত করিয়া ভাবিতেছিলেন। কিছুক্ষণ পরে তিনি বঙ্কিমচন্দ্রের প্রতি চাহিয়া একটী কবিতা শুনাইতে লাগিলেন । ঐ কবিতার প্রথম দুই চারি পংক্তি শুনিবামাত্র বঙ্কিমচন্দ্র চমকিয়া উঠিয়া বলিলেন, “ঘাট হইয়াছে, আপনি অপরাজেয়” । পরে কবিবর সমুদয় কবিতাটি শুনাইলেন। উহার মৰ্ম্ম এই, লক্ষ্মণ শক্তিশেলে আহত হইলে ধন্বন্তরিপুত্র সুষেণের ব্যবস্থামুসারে হনুমান গন্ধমাদন পৰ্ব্বতে বিশল্যকরণীর পাতা আনিতে গিয়া উহা খুজিয়া না পাইয়া গন্ধমাদন পৰ্ব্বত উপুড়িয়া লইয়া যাইতে যাইতে, পথিমধ্যে স্থৰ্য্যদেবকে বগলে পুরিয়া লইয়৷ পাহাড় মাথায় করিয়া আসিতেছিলেন ; ঐ পাহাড়ে বাঘভল্লুক, পশুগণ বাস করিত তন্মধ্যে শিবাগণ ভোরের সময় তাহদের সংস্কারসিদ্ধ হুয়া হুয়া" ডাক ডাকিয় উঠিল ; দারুণ গ্রীষ্মন্ত্রণায় এক দম্পতি গৃহছাদে শয়ন করিয়াছিল, আকাশে ঐ ছয় হুয়া ডাক শুনিয়া স্বামীর নিদ্রাভঙ্গ করিয়া স্ত্রী বলিল,— “কভু শুনি নাই নাথ, ভুবন মাঝারে গগনেতে ডাকে শিব হুয়া হুয়া করে ।” পরোপকার দীনবন্ধুর জীবনের ব্ৰত ছিল, তাহার প্রথম পরিচয় নীলদর্পণ প্রচারে পাওয়া যায়। এ ত গেল একটা গুরুতর উদাহরণ। কিন্তু অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঘটনাতে সৰ্ব্বদা উহার পরিচয় পাওয়া যাইত। যে ঘটনা অন্তের পক্ষে রহস্তজনক, ौनवकृब्र निक ऊँश कठे कङ्ग cवां५ श्ङ । বঙ্কিমচন্দ্র ও দীনবন্ধু >)○> একজন মাতাল ট’লে টলে খানায় পড়িতেছে, লোকে দাড়াইয়া তামাসা দেখিতেছে, হাসিতেছে, কিন্তু দীনবন্ধু তৎক্ষণাৎ দৌড়াইয়া গিয়া তাহার সাহায্য করিলেন । এই গুণটি বঙ্কিমচন্দ্রেরও ছিল । দীনবন্ধুর সম্বন্ধে একটি ঘটনা, যাহা আমি স্বচক্ষে দেখিয়াছি, তাছ। এখানে ধলিব । বহুকাল হইল সপ্তমী কি অষ্টমী পূজার রাত্রিতে, দীনবন্ধু, কাৰ্ত্তিকেয় চন্দ্র রায় ( দ্বিজেন্দ্রলালের পিতা) ও আমি নৈহাট ষ্টেশন হইতে প্রশস্ত বারাকপুর ফডর রোড দিয়া বাটী আসিতেছিলাম। ষ্টেশন হইতে প্রায় এক বিঘা পথ অন্তরে রাস্তার পশ্চিমদিগের ড্রেণে একটা ধবল পদার্থ দেখিলাম। মেটে মেটে জোৎস্না, ভাল বুঝিতে পারিলাম না, এই ধবল পদার্থটি কি ? উহা মাঝে মাঝে নড়ায়, প্রথমে বোধ হইল একটা গরু ড্রেণে পড়িয়া উঠিতে পারিতেছে না। কিন্তু নিকটস্থ হইয়া দেখিলাম উহা গরু নয় একটা বাবু মাতাল ড্রেণে পড়িয়া রহিয়াছে। আমরা তিনজনে তাঁচাকে ধরিয়া তুলিয়া দেখিলাম, একটা নবীন যুব, পরিপটি বেশবিদ্যাস, কিন্তু থানায় পড়িয়া উহ। বিশৃঙ্খল হইয়া পড়িয়ছে, তিনি আমাদের তিনজমেরই অপরিচিত । দীনবন্ধুর জিজ্ঞাসায় মাতাল বাবু বলিলেন তিনি কলকাতা হইতে শ্বশুরবাড়ী আসিতেছিলেন । ষ্টেশনের বাবুদের সহিত গুড়ির দোকানে মদ খাইয় শ্বশুরবাট যাইতে যাইতে খানায় পড়িয়া গিয়াছেন । শ্বশুরের নামধামেরও পরিচয় দিলেন। তাহার শ্বশুর সেখানকার একজন সন্ত্রান্ত লোক, আমরা
পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২১.djvu/৫১১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।