পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা । সেই যোগ-স্বত্র ছিন্ন করিলে কক্ষচ্যুত গ্রহের মত সৰ্ব্বনাশের দিকেই আমরা নিপাত লাভ করিব ; গ্রীসের নন্দন কুঞ্জের দিকে এক পা ও অগ্রসর হইব না । “বৃন্দাবনং পরিত্যজ্য পদুমেকং” যাইবার সাধ্য আমাদের কোথায় ? বৃন্দাবন আজ শ্ৰীহীন ঠেকিতেছে শুধু শ্ৰীপতির চরণ চিহ্ন চোখে পড়িতেছে না বলিয়া । সেটা সেদিন পড়িবে সেদিন ;– “যথৈবাগ্নেঃ সমাযোগাৎ সৰ্ব্বমগ্নিময়ং ভবেৎ” কুরূপ স্বরূপ হইবে, সৌন্দর্য্যে সীমা পাইব না। দিবসের প্রায় অৰ্দ্ধ অংশ জীবনের প্রতিদিনের পাঁচ ঘণ্টাকাল বড় অল্প মূল্যবান নয় । সেই অমুল্য সময়টা আমাদের Art-School এর দুই শত দশের মধ্যে দুই ছাত্র স-মাষ্টার কিসের ধ্যানে অতিবাহিত করিতেছে প্রহরের পর প্রহর বহুদিন আমি সেটা লক্ষ্য করিয়া আসিতেছি । যে স্থান দিয়া তাহারা সৰ্ব্বদা যাতায়াত করে তাহারই আশে পাশে সম্মুখে পশ্চাতে প্রাচীন প্রাচ্য শিল্পের মুন্দরতম নিদর্শনগুলি স্তরে স্তরে সজ্জিত রাখিয়াছি অথচ একদিনের জন্ত সে গুলির দিকে কেহ চাহিয়া দেখিল এমন ঘটনা ঘটতে দেখিলাম না! যে সকল দেবমূর্তি একদিন যাত্ৰীগণের নয়নানন্দ, ভক্তের হৃদয় মন্দিরে অধিষ্ঠিত ছিলেন তাহারা আজ সমষ্টিার ২০২ ছাত্রের কৃপাদৃষ্টির আশায় Art-Schoolএর পারে আসিয়া বসিলেন, যে সকল চিত্র, :ালিচ, ধাতুপাত্র বা গৃহসজ্জার মূল্যস্বরূপ দেশের রাজা বাদশাহের এক একট। "কের খাজনা ধরিয়া দিয়াছেন এবং যাহার ই চারিট পাইলে জগতের যে কোন শিল্প ইশত শিল্পে ভক্তিমন্ত্র । ১ ও ৩ শালা ধন্ত হইয়া যায়, সেইগুলা আজ এই বাঙালী ছাত্রগণের পাঠাগারের প্রাচীরতল মু বর্ণের জ্যোতি এবং বর্ণের ছটায় চিত্র বিচিত্র করিয়া তুলিল অথচ দিনের পর দিন বৎসরের পর বৎসর তা হাদের কোন সন্মান এমন কি কটাক্ষপাত পর্যন্ত লাভ হইতে দেখিলাম না । কোন দুঃসাধ্য ব্যাধি আমাদের মৰ্ম্মে মৰ্ম্মে জীর্ণ করিয়া করিয়া হৃদয়তন্ত্রী এমন অসাড় করিয়া দিয়াছে যে আনন্দের স্পর্শে তাহাতে আর ঝঙ্কার উঠে না ? এ রোগের ঔষধ কি ? এই যে “মোহামোহ নিমীলিতাঃ, শ্বসন্নপি ন জীবতি” অবস্থা ইহার প্রতীকার কোনখানে ? আমাকে যদি জিজ্ঞাসা কর তবে বুলিব “একাস্তি দৃঢ় ভক্তি”;–পাশ্চাত্য শিল্পের মোহ আকর্ষণ যেটাকে প্রাণের টান বলিয়া ভ্রম করিতেছি সেট নয়, স্বশিল্পের প্রতি সেই মুদৃঢ় আকর্ষণ যাহা আমাদের বলায়— “ন তথা মে প্রিয়তম আত্মযোনির্ণশঙ্কর ন চ সঙ্কর্ষণে ন শ্ৰী নৈবাত্ম যথা ভবান ।” তুমি যেমন তেমন আর কেহ নয় । আমি সম্প্রতি আমার কয়েক ছাত্রকে অজস্তা গুহায় বৌদ্ধ শিল্প চর্চা করিবার জন্ত পাঠাইয়াছিলাম। তাহারা নুতন কিছু শিখিবে এই আশায় উৎসাহের সহিত যাত্রা করিয়াছিল, ফিরিয়া আসিয়া - তাহার। বলিতেছে আমরা নুতন তো কিছু দেখিলাম না ! সে সকল চিত্রাবলীর বর্ণবিদ্যাস, রেখাপাত, হাবভাব সকলই তাঁহাদের চিরপরিচিতের মত বোধ হইল ! এট। মামিও প্রত্যtশা করি নাই । বাংলা ভাষা পড়িতে ও বুঝিতে বাঙালীর যেমন কোন কষ্ট হয় না