পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নববর্ষে। এ বিশ্বস্বষ্টি যেমন আদিহীন অন্তহীন, ইহার অনন্ত স্বষ্টি স্থিতি প্রলয়ের মধ্যে যেমন কোথাও বিচ্ছেদ নাই,বিরাম নাই,কোনটিকেই. স্বতন্ত্র করিয়া স্বাধীন করিয়া দেখিবার কোন উপায় নাই, তেমনি এবিশ্বজন্মের প্রথম প্রভাত হইতে আজ পর্যন্ত সমস্ত জন্মমৃত্যু যাতায়াতকে আচ্ছন্ন করিয়া, সার্থক ও সম্পূর্ণ করিয়া যে মহাকাল দাড়াইয়া আছে তাহাকে স্বতন্ত্র ও স্বাধীন করিয়া দেখাও আমাদের সাধ্যাতীত। কে বলিবে কোন স্বৰ্য্যকিরণের অরুণরাগে তাহার প্রথম জন্ম, কোন জ্যোৎস্নার স্নান ছায়াতলে তাহার মৃত্যু শয্য ! কিন্তু এ বিশ্ববিধান, এ কালস্রোত যদি আপনাকে বিচিত্র রূপ রস গন্ধ স্পর্শে নিত্য নূতন, চির মধুর করিয়া আমাদের মৰ্ম্মৰ্দ্ধারে আসিয়া আঘাত না করিত, অমৃত উৎসের আস্বাদ দান না করিত, তাহা হইলে এ সংসারকে একটা লৌহ কঠিন প্রাণহীন কারাগার ভিন্ন আর কিছু মনে করা সম্ভবই হইত না । তাই আজ পূৰ্ব্বগগনে উষার প্রথম উন্মেষের পবিত্র স্পর্শে চক্ষু খুলিয়া আকাশ আলোক বাতাস বিশ্ব সকলই নুতন, সকলই মধুর মনে হইতেছে। অসীম কালকে আজ আপনার ক্ষুদ্র সীমার মধ্যে বিচ্ছিন্ন করিয়া নবীন রূপে উপলব্ধি করিতেছি ; আজ নববর্ষের প্রথম প্রভাতকে নব আনন্দে আলিঙ্গন করিয়া ধন্ত হইতেছি ! এ পুলকম্পর্শের মধ্যে দেশ নাই কাল नाई, खांडि नाश् १ई नाहै। ७ श्रांनमाজাগরণ বিশ্ব মানবের নিত্যধন। অন্তরের এই আননা অনুভূতি আজ পৃথিবীর এক প্রাস্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্যন্ত সমগ্র মানৰ সমাজের বাহ্যজীবনকে বিকশিত করিয়া তুলিতেছে। আজ বহুশতাব্দীর সঞ্চিত হীনতা জড়ত্ব হইতে মুক্তি লাভের জন্ত হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খৃষ্টান সকলেই সচেষ্ট । দক্ষিণ আফ্রিকার সামান্ত শ্রমজীবী ভারতবtলী হইতে প্রবল পরাক্রান্ত ইংলণ্ডবাসী পর্য্যন্ত আজ এ জাগরণের আন্দোলনে বিচলিত। চীন, তিব্বত, ভারত, পারস্ত, তুরস্ক, মিশর ইত্যাদি প্রাচ্যপ্রতীচ্য সকল দেশই আজ নবজীবনের সাধনার জন্ত, মনুষ্যত্বের সন্মানরক্ষার জন্ত, আত্মলাভের জন্ত অগ্রসর ! আজিকার এই শুভ্ৰেজিল আকাশের তলে দাড়াইয়া পৃথিবীর এই পুলক চাঞ্চল্য এই আত্মসাধন ও আত্মোৎসর্গ যখন দেখি, তখন কবির মোহন সুরে মুগ্ধ প্রাণ আপনিই গাহিয় উঠে— “নব আনন্দে জাগো আজি নব রবি কিরণে, শুভ্র সুন্দর প্রতি উজ্জল নিৰ্ম্মল জীবনে ৷” নববর্ষে কবির এই মৰ্ম্মবাণী সত্য ও সার্থক হউক, এ সংসার শুভ্র সুন্দর প্রীতিসমুজ্জল নিৰ্ম্মল জীবনে পূর্ণ ও পবিত্র হইয় উঠুক, আজ ইছাই আমাদের অস্তরের প্রার্থনা।