পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা । কান্তভাবে পোছিয়াছে। কিছু পূৰ্ব্বে যে দৃষ্টির সম্মুখে সে কুষ্ঠায় সঙ্কুচিত হইয়া উঠিতে- ' ছিল, এখন তাহাকেই প্রেমাবেশে বলিতেছে— “জনম অবধি হাম রূপ নেহীরস্থ নয়ন না তিরপিত ভেল, লাখ লাখ যুগ হিয়া পর রাখস্থ তবু হিয়া জুড়ন না গেল” । এই কান্তভাবের মধ্যে একটি অপরূপত্ব আছে । স্বষ্টির প্রারম্ভে জীবাত্মীয় ও পরমাত্মায় যে ভেদ হইয়াছিল, তাহ এই চরণ কয়টিতে বাজিয়া উঠিয়াছে ; সেই অনন্ত কালের বিরহ-ব্যথা, দূরত্বে যাহা প্রতিদিন নিবিড় হইয়| উঠিতেছে, বিশ্বচরাচরের সেই অখণ্ড তৃষ্ণ, অদহ আকুলত, লক্ষ যুগের বিচ্ছেদ-দুঃখ স্মরণ করিয়া আজ চিত্ত কাদিয়া উঠিয়াছে ! ভারতবর্ষের এই অনঙ্গুমেয় পরামুরক্তির ভিতর আর একটি জিনিস লালিত হইয়াছিল, তাহা উদারতা । একই ধৰ্ম্মাবলম্বী হইয়া যখন পৃথিবীর অপর জাতি শুধু আচারগত ভেদ লইয়া হিংস্ৰ শ্বাপদের মত পরস্পরের রক্তপাতের জন্ত যুঝিয়া মরিতেছিল, ভারতবর্ষ তখন শান্ত সমাহিত চিত্তে আপনার এক অঙ্গনতলেই আর্য্য অনার্য্য বর্ণসঙ্কর সমস্ত বিভিন্ন জাতির পূজার স্থান করিয়া দিতেছিল। কারণ সে এক শুধু জানিয়াছিল যে, *ধলন্ধ পুমান সিদ্ধো ভবত্যমৃতী ভবতি তৃপ্তে। ভবতি । যৎ প্রাপ্য ন কিঞ্চিদ্বাস্থতি, ন শোচতি ন দ্বেষ্ট ন রমতে ন উৎসাহী ভবতি ॥” যাহাকে লাভ করিলে মমুন্য সিদ্ধ হয়, অমৃত হয়, তৃপ্ত হয়, র্যাংকে পাইলে মঙ্গুষ্যের প্রাচীন ভারতের পূজা। اث بطلا দ্বেষ, তৃষ্ণা, শোক গত হয়, বাসনার তত্ত্ব ছিন্ন হয়, যিনি "গুণরহিতং জন্মরহিতং প্রতিক্ষণ বৰ্দ্ধমানম্ বিছিন্নং সূক্ষ্মতরমমুভবরূপ,” “গিনি অদৃশুমগ্রাহমবর্ণমচক্ষুঃ শ্রোত্ৰং তদপাণিপাদং নিত্যম বিভূং সৰ্ব্বগতং স্বস্থঙ্কং তদব্যয়ং যদ্ভূতযোনি—যিনি অদৃপ্ত, অগ্রাহ, অগোত্র, অবর্ণ, অচক্ষু, অশ্রোত্র, হস্তপদ রহিত, নিত্য, সৰ্ব্বব্যাপী, সৰ্ব্বগত, স্বহম্ম,অব্যয় ও ভূতযোনি —র্তাহাকে শুধু নামের দ্বারা বিভক্ত করা বিমূঢ়তা মাত্র। হ্রদ তড়াগ নদী সাগর উপসাগর প্রভৃতি নামের সহস্র বিভিন্নতা সত্ত্বেও জল যেমন বিভিন্নত প্রাপ্ত হয় না, তেমনি তিনি ও আধারের ভেদে বিভিন্ন হন না, কেন না ইনি-ই তিনি "যদেবেছ তদমুত্র যদ-মুত্র তদম্বিই মৃত্যু ম মৃত্যুমাপ্নোতি য ইহ নাম্ভেবপগুতি” যিনি এখানে তিনিই সেখানে, যিনি সেখানে তিনি-ই এখানে, যে ইহাকে নান রূপে দেখে সে মৃত্যু হইতে মৃত্যুকে প্রাপ্ত ३श्न | একজন অপরিচিত লোককে দেখিলে যেমন প্রথমেই তাহার অবয়ব ও পরিচ্ছদ আমাদের চোখে পড়ে, কিন্তু নিকটতমআত্মীয়কে দেখিলে শুধু তাহার স্নেহই মনে জাগ্রত হইয়া উঠে তেমনি ঘনিষ্ঠ পরিচয়ে ব্রহ্মের নামরূপ ভারতবর্ষের- চোখে পড়ে নাই—সে শুধু তাহার মধ্য হইতে দেখিতে পাইয়াছে তাহাকে—যাহার “অগ্নিখুৰ্দ্ধা চক্ষুষ চন্দ্র সুৰ্য্যো দিশঃ শ্রোত্রে বাগ বৃত্তাশ্চ বেদা: বায়ু প্রাণে হৃদয়ং বিশ্বমস্ত পদ্ভ্যাং পৃথিৰী!”