পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা। পোর্ষ্যপুত্র । ১৯১ পোষ্যপুত্র ধারাবাহিক উপন্যাস శిఆ দেবমন্দিরের মধ্যে তখন সন্ধ্যারতির জন্ত অগ্নি রাখা হয় নাই। রাজরাজেশ্বরীর কাশরঘণ্টা বাজিয়া বাজিয়া থামিয়া গিয়াছে। উপরে সাটিনের উপর জরীর বুটিদার চাদোয়, তাহার নীচে মৰ্ম্মর প্রস্তরের বেদির উপর রৌপ্য সিংহাসনে রাধা শু্যামের যুগলমূৰ্ত্তি পাশাপাশি স্থাপিত। যুগলকিশোরের নিকষ কৃষ্ণপাথরের চিঙ্কনদেহ পীতাম্বরে এবং ময়ূরপুচ্ছ সুবর্ণবংশী ও স্বর্ণচূড়ায় সাজান। বিগ্রহের গলায় তখনও সেই শাস্তির হস্তের গাথা বিনাস্থতার মাল৷ চামরের অল্প বাতাসে জুলিয়া ফুলিয়া সুবাস ছড়াইতেছে। সে মালা এখনও অমান । রাধার তপ্তকাঞ্চনবর্ণ নীলাম্বরে সুশোভিত । সে বস্ত্রের প্রত্যেক চুমকি-সলমাটি শাস্তি নিজের হাতে অনেক যত্বপূৰ্ব্বক বলাইয়াছিল। বস্ত্ৰালঙ্কারশোভিত সেই কাঞ্চনমুৰ্ত্তি দুই পাশ্বস্থ অন্তান্ত দেবপ্রতিমাগণের সহিত প্রতিদিনকার মতই আলোকঝলকিত । তবুও আজ সমস্ত দেবালয়ট যেন বর্ষার বাতাসের মতন হাহা করিয়া উঠিতেছে, তবুও যেন আজ সেখানে কেহই নাই। পুষ্পচন্দনের সুকোমল ঘনসৌরভে মন্দিরের বায়ুস্তর আমোদিত। বাতির আলো বহুশাখাবিশিষ্ট বেলওয়ারি ঝাড়ের মধ্য হইতে তাহাদের পিঙ্গলবৰ্ণ আভা বিচ্ছুরিত করিয়া নিম্নে চাহিয়া দেখিতেছে। নিত্যসেবার ভোজ্য নৈবেদ্ধ প্রতিদিনকার মতই সযতনে রচিত। কিন্তু তথাপি বৃদ্ধ পুরোহিত তাহারি মধ্য হইতে জাজ শত খুটিনাটিতে ক্রটি ধরিতে লাগিলেন। ঠাকুরের পানের বাট। আজ এপৰ্য্যন্ত আলিয়া পৌছে নাই। ধূনা জালাইবার পূজার উপকরণ শুামের সম্মুখে এবং শুমের ভোজ্যপেয় শুামার বামভাগে রাখা হইয়াছে। পুরোহিত ঠাকুর বিলম্বে প্রাপ্ত ধূনাচির অৰ্দ্ধদগ্ধ কাষ্ঠ খণ্ডের মধ্যে ধূনাচুর্ণনিক্ষেপ করিদ্ধা অপ্রসন্ন মুখে কহিলেন “মালক্ষ্মী তো বাড়ী এসেছেন, তবে আবার এসব বে’বন্দোবস্ত হচ্চে কেন ?” শুামাকান্ত যখন আলোক প্রদর্শিত পথে ছাত মাথায় দিয়া অল্পবৃষ্টিটুকু বাচাইয়। মন্দিরের মধ্যে প্রবেশ করিলেন, তথন আরতি শেষ হইয়া আসিয়াছে । আচার্য্য পঞ্চ প্রদীপ, শঙ্খ ও পুষ্পদ্বারা আরতি সমাপ্ত করিয়া ভোজ্যোৎসর্গ সমাধা করিতেছেন। বুদ্ধ জমাদার তাহীর বিগ্রহক্রয়কে ভক্তিভরে সাষ্ট্রাঙ্গে প্ৰণিপাত করিয়া উঠিয়া বসিতেই এই মঙ্গল উৎসবের সর্বাঙ্গীন অপূর্ণতা প্রথমেই তাহার দৃষ্টি আকর্ষণ করিল। পুরোহিতের পশ্চাতে, অল্পদুরে মৰ্ম্মর মেজের উপর কোমল করতল রক্ষা করিয়া অৰ্দ্ধাবগুণ্ঠনলতী শাস্ত তো আজ বসিয়া নাই। হামাকাস্তের মনটা সহসা বিকল হইয়া উঠিল, সেতো কখনোই এখানে অনুপস্থিত থাকে না ! উঠিয়া দ্বারের নিকট আসিয়া একজনকে জিজ্ঞাসা করিলেন “বেীমার এসেছিলেন ?” সে জানাইল “র্তাহার আসেন নাই”। “বাড়িতে জিজ্ঞাসা করে আর বেীমা কেন আসেননি, অমুখ করেনি তো ?” তৃত্য চলিয়া গেল। শু্যামাকান্ত সেইখানেই দরজা ধরিয়া দাড়াইয়া রছিলেন, উদ্বেগে ও অম্লতাপে মনটা অত্যন্ত চঞ্চল হইয়া উঠিয়া