পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/২০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা । বৃদ্ধ জমীদার কাদিয়া ফেলিলেন “হেম মাকে এখান থেকে নিয়ে গ্যাছে, নিশ্চয়ই জোর করে নিয়ে গেছে”— ‘সেকি এই দুর্য্যোগে এই ভাদ্র মাসে ? ছোটবাবু পুরো নাস্তিক হলেন যে। এতোবড় বংশের সন্তান ! হা জগদম্বে !” বিস্ময়ে পুরোহিতের নেত্র বিস্ফারিত হইয়া রহিল। এই কথায় ব্যাকুলবৃদ্ধ ছটফট করিয়া মন্দিরের রুদ্ধদ্বার খুলিয়া ফেলিয়া একেবারে দ্রুতপদে বাহিরে আসিয়া দাড়াইলেন । জমাট বাধা কালে মেঘে থাকিয়া থাকিয়৷ তখনও বিদ্যুৎফুরণ হইতেছে ঝুপ ঝুপ করিয়৷ বর্ষণও চলিতেছে, পুখুর ঘাটে ভেকদলের আনন্দকলরবের শেষ নাই। দুর্য্যোগ পূর্ণ অন্ধকার প্রকৃতির পানে তাকাইয়। তাছার সহস্ৰ বেদনায় বিদ্ধ অশাস্ত চিত্ত আজ আবার নূতন নৈরাপ্তে হাহাকার করিয়া উঠিল । এই অন্ধকার প্রলয়বার্তা ঘোষণার মাঝখানে তাহার সাধনার লক্ষ্মী কাহার নিষ্ঠুর শাপে আজ অতল সিন্ধু তলে নিমজ্জিত হইয় গেল ! শোকদীর্ণ প্রকৃতির বুকের ক্ৰন্দন আকর্ষণ করিয়া তাহার প্রাণের মধ্যে হtহাকার ধ্বনি উঠিল, ঝড়ের শব্দে মিশিয়া তাহার বেদনারুদ্ধ ক্ৰন্দন ব্যাকুল আবেগে বিমানের স্তরে স্তরে উঠিয়া বলিতে লাগিল, “তুই কেন গেলিম ! তুই কোথা গেলি ? অার কি আমি তোকে ফিরে পাবো ?” २१ লর্ড কর্জনের প্রবৰ্ত্তিত বঙ্গব্যবচ্ছেদ ব্যাপার লইয়া বাঙ্গালায় সেই সময় স্বদেশী আন্দোলন তুমুল হইয়া উঠিয়াছে। মুখমুপ্ত বঙ্গবাণীগণ রাবণের আহবানে অকাল জাগ্রত পোষ্যপুত্র। 3 ఫిని কুম্ভকর্ণের ন্তায় তখনও বিস্ময় বিহবল, তখনও পৰ্য্যস্ত তাহারা বুদ্ধি বা কর্তব্য স্থির করিয়া লইতে পারে নাই। যুবকগণ বিশেষতঃ বালকের দল উদ্যমের সহিত উঠিয়া দাড়াইলেও বড় বড় প্রবীণ ‘লীডারের" তখন ও পর্য্যন্ত চিস্তাঙ্কিত মুখে গোফে চাড়া দিতে দিতে বলিতেছেন “এ কি টিকিবে ?” মহৎ উদ্দেশু এপর্য্যস্ত কোন দেশে কখনও ব্যর্থ হয় নাই ; আজে হইল না। স্বদেশী আন্দোলন বৈশাখী আকাশে ক্ষণিক বজ বিদ্যুতের অগ্নিমুখী গর্জনের পর একটা স্থায়ী বর্ষণের আগ্রহে পরিপূর্ণ নবীন মেঘরাশি সুশোভিত রূপ ধারণ করিল। যে সকল দেশবাসী এই সময়ে প্রকৃত পথই অমুসরণোন্তত হইলেন রজনীনাথ তাছাদের মধ্যে একজন । রজনীনাথ কদিন হাফ ফেলিবারও অবসর পান নাই। নিজের কাজের ভিড় ঠেলিয়া ফেলিয়া নুতন উদ্যমে নুতন উৎসাহে সভায় যোগদান ও মফঃসলের কাৰ্য্যে ঘুরিয়া বেড়াইয়া, স্বদেশী শিল্প গ্রহণে উৎসাহ দান করিয়া বহু দিনের আক্ষেপ মিটাইতে ছিলেন। একদিন কাজ কৰ্ম্ম সারিয়া ভিতরে আসিলে বসুমতী তাহার উৎসাহদীপ্ত অথচ স্নানাহারের অনিয়মে ঈষং শুষ্ক মুখেরদিকে চাহিয়া অসুযোগের সুরে বশিলেন “একি শ্ৰী হয়েচে, মাগে তোমার সকলি কি বাড়াবাড়ি !” রজনীনাথ আয়নার সম্মুখে গিয়া হাসিয়া কহিলেন “কেন বস্ব ? এইতো দিব্যি শ্ৰী রয়েছে, আবার কি চাও ?” বসুমতী চেষ্টা করিয়া হালি চাপিয়া রাখিলেন ; “হঁ্যা হ্য বডড ঐ বেড়েছে ! বলি একেবারেই