পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/২১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা । দিকে চাহিয়াই থমকিয়া গিয়া চুপ করিলেন। শাস্তি তখনও মাটিতে বসিয়াছিল তাহার চোখের জল তখন ৪ ফুরায় নাই। রজনীনাথ বলিলেন “যা শুনলুম তাতে বেশ দেখচি তুমিই দোষী । লোকের কথাই তোমার বড় হলো ! একবার ভেবে দেখলে না যে তোমার এই ব্যবহার তোমার বীপকে কতখানি আঘাত করবে- তুমি আমার সেই শান্তি ! যাকু সবি আমার কপাল, আমার সবি সহ করতে হবে । কিন্তু ষে পর্য্যন্ত না তোমার শ্বশুর তোমায় ক্ষমা করচেন সে পর্য্যস্ত আমার সঙ্গে তোমাদের সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই,— শান্তির চোখের জল মুছাইবার চেষ্টা করিতে করিতে বসুমতী তীব্রভাবে ফিরিয়া মুহূৰ্ত্ত সংযত হইয়া ব্যাকুলভাবে কঙ্গিলেন ; “আমন কথা বলোনা ; দোষ তোমার গোয়ার গোবিন্দ জামায়ের । ওরে কেন শুধু শুধু ওসব নিষ্ঠুর কথা বলচে–তুমিতো এমন নিষ্ঠুর ছিলে না।” রজনীনাথ ঈষৎ চঞ্চলভাবে বিছানার উপর বসিয়া পড়িলেন । “সত্যই কি তিনি নিষ্ঠুরতা করিতেছেন ? কাহার প্রতি সে নিষ্ঠুরতা ? যে তাছার জীবনের আধখানা জুড়িয়া রহিয়াছে, তাহার প্রতি । না নিষ্ঠুরতা নয়, লোকে ইহাকে যেমন ইচ্ছা শব্দ দ্বারা বিশেষিত করুক—তিনি জানেন তিনি কর্তব্য পরায়ণ পিতা ; সন্তানের ভুলের, অন্যায়ের প্রশ্রয় দিয়া তাহীদের সর্বনাশের প্লথে আন পিতৃ কৰ্ত্তব্য নয়। বসুমতী স্বামীকে একটু চিন্তিত দেখিয়া আশ্বস্ত হইয়া বলিলেন “এখন এরা থাক ; তুমি তুমি না হয় একদিন লক্ষ্মীপুরে গিয়ে— পোষ্যপুত্র । పిసిసి “না আমি হেমকে বলে এসেছি কাল সকালের ট্রেনেই এর বাড়ি ফিরে যাবে।” পাশের ঘরের খোলা দরজার মধ্য দিয়া সদ্যনিদ্রোখিত সুপ্রকাশ অনাবৃত দেহে অসংযত বস্ত্রে উঠিয়া আসিল । তাহার বড় বড় চোখের চঞ্চল কালো তারা ও দীর্ঘ পল্লবগুলি ঘুমে জড়াইয়া রহিয়াছে, স্থল শুভ্র স্বন্ধের কাছে কালো চুলের গোছগুলিকেও যেন নিদ্রিত সপশিশুর দেখাইতেছিল। “বাব দিদি কি এসেচে ? আমি দিদিকে যেন স্বপ্নে দেখছিলুম। ঐতো দিদি—” বলিতে বলিতে হঠাৎ দিদির উপরে দৃষ্টি পড়ায় বিস্ময় মিশ্রিত আনন্দধ্বনি করিয়া বালক দিদির কাছে ছুটিয়া গিয়া দুইহাতে তাহাকে জড়াইয়া ধরিল। নিদ্রাবিদূরিত কালে চোখ আহলাদে উজ্জল করিয়া সাগ্রহে ঈষৎ অভিমান প্রকাশ করিল। “হঁ্যা দিদি চুপি চুপি না এসে আমায় কেন আগে থেকে লিখলিনে ভাই,তা হলে তো আমি কক্ষণে ঘুমতুমন, নিশ্চয়ই তোকে ইষ্টিসান থেকে আনতে যে তুম—” রজনীনাথ আদেশ করিলেন “মুকু তুমি এখন দিদির কাছে যেওনা নিজের বিছানায় যাও—” চমকিয়া শান্তি তাহার বক্ষলগ্ন স্নেহের ভাইটিকে ছাড়িয়া দিল, সাশ্চর্য্যে বালক দিদিকে পরিত্যাগ করিয়া বিস্ময়বিস্ফারিত চক্ষে পিতার মুখের দিকে চাহিয়া দেখিল, কিন্তু তখন তাহার মুখের এমন একটা ভাব ছিল যাহা দেখিয়া আহ্বরে নির্ভীক ছেলে মু প্রকাশও ভয় পাইল । সেই অলজঘ্য আদেশের বিরুদ্ধে একটিমাত্র প্রতিবাদের শব্দ উচ্চারণ করিতে সাহসহীন মুকু ছলছল চক্ষে একবার দিদির অশ্রীহীন চোখের পীনে চাহিয়া দেখিল—দিদির মতন