পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৩০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, চতুর্থ সংখ্যা। সেদিন গুiমাকাস্তের বিশ্রাম অবসর হ্রস্থ হইয়া পড়িল ভূত্য প্রবেশ করিয়া জানাইল—“বাবু এসেচেন ।”

  • কে বাৰু?” এই প্রশ্ন উঠিবার পূর্বেই রজনীনাথ গৃহে প্রবেশ করিলেন । “একি রজনী ! অাশচর্ষ্য হইয়! শুমীকান্ত উঠিয়া সোজ৷ হইয়া বলিলেন “এসে এসে আমি তোমার কাছেই লোক পাঠাব ভাবছিলুম। বসে, সব ভালতো ?” শেষের স্বরটা কাপিয়া আসিল । রজনীনাথ বেহাইকে প্রণাম করিয়া ভূত্যের দেওয়া কেদারথোন। শুামাকাস্তের আসনের দিকে একটু সরাই লইয়া বসিতে বসিতে উত্তর করিলেন “আপনার আশীৰ্ব্বাদে সব এক রকম চলচে”—মানুষ খুব বেশি রকম একটা দুঃস্বপ্ন দেখিয়া উঠিলে প্রথম যে মুহুর্তে সেটাকে অবাস্তব বলিয়া জানিতে পারে সেই মুহূর্তেই তাহার মনে প্রাণে যে রকম একটা গভীর শান্তি ও মুক্তির আনন্দ জাগিয়া উঠে রজনীনাথের আগমনে শুমাকী স্তও ঠিক সেই রকম একটা স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ আরাম অনুভব করিতে লাগিলেন । বুকের মধ্যে যে যন্ত্রণার শূল ব্যথাটা কণ্ঠ অবধি ঠেলিয়া ঠেলিয়া উঠিতে ছিল মন্ত্র চিকিৎসার অব্যর্থ প্রয়োগের দ্যায় তাহা মুহুর্তে নিবৃত্ত হইয়া গিয়া শরীরে যেন নূতন আশা ও বলের স্বষ্টি করিল। পরিত্যক্ত আলবোলার নলটা তুলিয়া লইয়া ব্যগ্রভাবে জিজ্ঞাসা করিলেন “আর কেউ এসেছে ?” রজনীনাথ শুামাকান্তের মুখের পাণ্ডুত লক্ষ্য করিয়া ঈষৎ কুষ্ঠিত ভাবে মৃদুস্বরে কহিলেন “ন মেঘ করল সেজন্ত একাই এলেম, আপনি

ভাল আছেন তো ? হতাশভাবে শুাকাকাস্ত কেদারার পৃষ্ঠে পোষ্যপুত্র । ≤brፃ মস্তক নিক্ষেপ করিয়া অধীর কণ্ঠে উত্তর করিলেন “আর ভাল, মৃত্যু ভুলে গিয়েছে তাই বেঁচে থাকা,—না হলে মরণের সময় তো হয়েছে।” এই কথা কয়ট। রজনীনাথকে এমন প্রবলভাবে আঘাত করিল যে তিনি ব্যথিত ও লজ্জিত মস্তক নীরবে হেঁট করিলেন। অনেকক্ষণ পর্য্যস্ত শুমী কাপ্ত আর কোন কথাই কহিলেন না, রজনীনাথও চুপ করিয়া বসিয়া রহিলেন, বক্তব্য বিষয়টিকে বেশ করিয়া গুছাইয়া সহজ করিয়া লইতে আজ তাহার অত্যধিক বিলম্ব ঘটতেছিল। ক্রমে স্তব্ধ গাছপালা দোলাইয়া, নাড়া দিয়া একট। সৰ্ব সৰ্ব শব্দ উঠিল ও কড় কড় করিয়া মেঘ ডাকিয়া মুহূমুহুঃ বিদ্যুৎ চমকিতে লাগিল । তখনও ঝাক বাপিয়া পখীগুলা ওপরের আশ্রয়াভিমুখে নদীর উপর দিয়া সঁ। সঁ। করিয়া উড়িয়া চলিয়াছে ; এপারের ছায়াময় ঘাটের পথে পল্লীবধুগণের মলের ও চুড়ির শব্দ মুখর হইয়া উঠিল । সঙ্কোচ কুষ্ঠিত ভাবে রজনীনাথ সহসা বলিয়া ফেলিলেন— “আপনি বোধহয় তাদের ক্ষমা করেছেন ? সে এর কম ব্যবহার করবে তা”— শুমাকান্ত প্রশ্নপূর্ণ দৃষ্টিতে র্তাহার দিকে চাহিয়া বাধা দিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন “কাদের ক্ষমা করেছি ?” আবার রজনীনাথ ইতস্তত করিতে লাগিলেন ; একটু থামিয়া বলিলেন “যারা আপনার কাছে অমার্জনীয় অপরাধে অপরাধী,— হেম বড় অষ্টায় করেছে কিন্তু তার চেয়ে—” যে নামটা তাহার জিহবা অপরাধী শ্রেণীর সহিত সংযুক্ত করিতে জড়াইয়া আসিতেছিল সেটা তাহাকে জোর করিয়া উচ্চারণ করিবার