পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৩০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, চতুর্থ সংখ্যা । বোঝাই হইয়া অনিচ্ছুক গতিতে ও খেয়ার নৌকা দ্রুতগমনে গন্তব্য পথে চলিয়াছে। তাহাদের দাড়ের উত্থানপতনের শব্দ ও তটপ্রান্তে নিপতিত ভয়তরঙ্গের অস্ফুট আৰ্ত্তনাদে গৃহস্থ গৃহের সন্ধ্যার শঙ্খধ্বনি মিলিত হইল । সঙ্গে সঙ্গে বর্ষার বাতাস নদীতীরের বাধাঘাট হইতে হুহু করিয়া ছুটিয়া আসিল । সেই সাড়ায় চমকিয়৷ শিবানী একবার মুখ তুলিল, সন্মুখের দেওয়ালে চওড়া ফ্রেমে আঁটি বিনোদ কুমারের অপরিচিত বালক মূৰ্ত্তি অন্ধকারে অদৃশ্য হইয়৷ আসিয়াছে । হাফ ছাড়িয়া সে আবার মুখ ফিরাইয়া লইল । এখন আর সন্ধ্য। তাহাকে চকিত করিয়া প্রদীপের কাছে টানিয়ু আনে না, সন্ধ্যাশঙ্খ অভিমানে মেীন পড়িয়া থাকে। এমন সময়ে দীপহস্তে সিদ্ধেশ্বরী ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিয়া বলিয়া উঠিলেন “ঢের ঢের বেহায়া দেখেছি বাবা, এমন ধারা কিন্তু আমার বাপ চোদপুরুষে কখনও দেখেনি ! মিনষে কোন মুখ নিয়ে আবার ওকেলতি করতে এলো গা ?” শিবানী যেন ঈষৎ চকিত হইয়া উঠিল, হঠাৎ মুখ ফিরাইয়া সে জিজ্ঞাসা করিল “কে ম! ?” কস্তার এই অমুসন্ধিংসীয় সিদ্ধেশ্বরী হঠাৎ খুব উৎসাহিত হইয়া প্রসন্নভাবে বলিয়া উঠিলেন –“হেমার শ্বশুর মিন্‌সে এসেচে যে তা জানিসনে ? সেই অবধি বেইএর কাছে হত্যে দিয়ে পড়ে আছে, ওঠবার নামটি পর্য্যন্ত নেই। কি যে সলাচ্চেন কলাচ্চেন ত কেষ্ট জানেন । একে তো বুড়র তাদের ওপোরেই সাতটা প্রাণ-অামার পোথ্যপুত্র। శిyసి গুড়োটুকু যেন ওর”—শিবানী বিদ্যুৎ পৃষ্টের মত মূহূর্তে ফিরির বলিল “তিনি কি একলা এসেছেন মা ?” সিদ্ধেশ্বরী সাদা পাথরের টেবিলে তৈলদীপটা নামাইয়। রাখিয়৷ একটুখানি মুখ বাকাইয়া অপ্রসন্ন স্বরে উত্তর করিলেন “আপাতক একলাই বটে, তা বেশিক্ষণ আর একলা থাকচে না! মিন্‌ষে আমাদের শত্রুর ছিল, তা দেখমী শিবু, একটা কাজ কর দেখিন সকল দিকেই ভাল হবে। তোর শ্বশুরকে বল আমি ওদের সঙ্গে থাকতে পারব ন!—থtাকতে হয় ওর অন্ত, কোথাও থাকুক-” দীপ্ত স্থৰ্য্যালোকের উপর মেঘ আসিয়৷ পড়িলে তাহ যেমন এক মুহুর্তেই স্নান হইয়৷ যায়। শিবানীর মুখ তেমনি মুহূৰ্ত্তে অন্ধকার হইয়া আসিল । সে একটুখানি মুখ ফিরাইয়া বক্ষের আঘাতটা সামাইয়া লইবার জন্ত চেষ্টা করিতেছিল। মীর কথা শেষ হইবার পুৰ্ব্বেই ফিরিয়া উদ্ধতভাবে বলিল না’। তাছার মুখের উপর ঘন লাল রংয়ের একটা তপ্ত শোণিতের উচ্ছস স্পষ্ট হইয়া উঠিয়াছিল দীপের অালোকেও তাহা সিদ্ধেশ্বরীর অগোচর রহিল না। তিনি মনে মনে একটু ভয় পাইয়া গেলেও হাড়ে হাড়ে জলিয়া গেলেন, অথচ কস্তার এই আসন্ন ঝড়ের মতন স্তব্ধ মুখের দিকে চাহিয়া—তাহাকে তাহার জেদের বিরুদ্ধে লওয়াতে চেষ্টা করা যে কতখানি অসাধ্য ব্যাপার তাহা বুঝিলেন । তাহ নাজান ছিল এমনও নয়। মনে মনে জলিতে লাগিলেন। কিন্তু যাহ। আর কখনও ঘটতে দেখা যায় না আজ তাহাই ঘটিল। এক মুহূৰ্ত্ত পরেই শিবানীর মুখের রং বদলাইয়া গেল ও সে চমকিত্ত