পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৩৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা । রমেন্দ্র কহিল, “বাওঁতে পুরুষ মানুষ আছে কি কেউ ?” সে রমণী—পর পুরুষের সহিত কথা কহে কি বলিয়া ! দ্বার হইতে নড়িতেও চাহে না, অথচ,মাথা নাড়িয়া উত্তরটা দেওয়াও প্রয়োজন মনে করে না । রমেন্দ্ৰ ভাবিল, কি অদ্ভুত জীব । বিরক্ত হইয়। রমেন্দ্র ফিরিল ! দেখে, অদূরে একটা লোক টোক মাথায় দিয়া এদিকে আসিতেছে। লোকটা আসিয়া কহিল, “বাবু, আপনার বিছানার মোট আজ ভারে এসে পৌচেছে । গোলমালে একেবারে বজবজ চলে গিয়েছিল—সেখানে সারারাত্র বৃষ্টিতে ভিজেছে। সকালে হঠাৎ গার্ডসাহেবের চোখে পড়ায় ভোরের ট্রেণে সন্তোষপুর এসেছে। ষ্টেশনমাষ্ঠীর মশায় খপর দিয়ে পাঠালেন !” লোকটা কল্যকার ষ্ট্রেশনের জমাদার ! ইতিমধ্যে গেtয়াল আসিয়া পড়িল । হংসেশ্বর বাবুর বাড়ীতে অতিথি,— শুনিবামাত্র গোয়াল সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করিয়া বাবুদিগের কুশল জিজ্ঞাসা করিল ! পরে বলিল, “বাবু, রাত্রে ও বাড়ীতে ভূতের উপদ্রব হয়, শুনেছি—তবে দেখিনি ; মালীর কাছেই শুনেছি। সে দু-তিনদিন ভয় পেয়ে জরে পড়ে—সেজন্ত আজ সাত-আট দিন সে পালিয়েছে !” রমেক্স ভাবিল, কথাটা ভাগ্যে কাল তাহারা শুনিবার অবসর পায় নাই ! গোয়ালা ও জমাদারের সাহায্যে বাজারের ব্যবস্থা হইল। মোরলামাছ, পুইশাক ও দুই-চারিটি মাত্র কাচকল ! २ রস ভঙ্গ । "లిల్క్రి) রমেন্দ্ৰ কহিল, “খিচুড়ী চড়ানো যাক ! বেশী লেঠায় কাজ নাই!” উভয়ে ভীষণ উদ্যমে লাগিয়া যে আহাৰ্য্য প্রস্তুত করিল, তাহ মন্থয্যের মুখে রুচিবার ত ত নহেই ! ডাল ও চালে মিলিয়া যে এমন বীভৎস দ্রব্যের স্থষ্টি করিতে পারে, তাহা কেহ স্বপ্নে ও ভাবিতে পারে না ! কিন্তু ক্ষুধাতিশয্যে তাঙ্গও এতটুকু পড়িয়া রহিল না। রমেন্দ্র কহিল, "খাসা হয়েছে, মায়া!” মায়া লজ্জায় মরিয়া গেল ! তাহার মনে ধিক্কার জন্মিয়াছিল ! কবিতা লিখিয়৷ কত সম্পাদকের নিকট হইতে সে বাহবা লইয়াছে, কিন্তু নারীর কর্তব্য-সম্পাদনে সে এত অপদাৰ্থ ! স্বামীকে একদিন রাধিয়। খাওয়াইয়া যে তৃপ্তিদান করিবে, সে সামর্থ্যটুকুও তার নাই ! ছিঃ ! বিকালের দিকে ঝড় ও বৃষ্টি থামিল ! এবং কম্প দিয়া মায়ার জর আসিল । রমেন্দ্র পাগলের মত হইয়া উঠিল ! এখন, উপায় কি ? এমনে দেশ–না আছে, গাড়ী, না পান্ধী ! গোয়ালার সাহায্যে একখানা ভুলি সংগ্ৰহ করিয়া, স্ত্রীকেশাইয়া রমেন্দ্র ষ্টেশনে আসিয়া পড়িল ! এবং সাড়ে সাতটার টেণে উঠিয়া একেবারে কলিকাতায় ! জিনিষপত্র পাঠাইবার ভার ষ্টেশন-মাষ্টারবাবুটি গ্রহণ করিয়া রমেন্দ্রকে যথেষ্ট অনুগৃহীত করিলেন । কলিকাতায় হাসিয়াই রমেন্দ্রের আমাশয় হইল! সে দিনকার লুচির হাড়ির সন্ধান মিলিয়াছিল ; সেটা বাড়ীতেই পড়িয়াছিল ; ষ্টেশনে হারায় নাই । দশ-বারে দিন রোগ ভোগ করিয়া উভয়েই আরোগ্য লাভ করিল। আরোগ্যলাভ