৩৪শ বর্ষ, দ্বাদশ সংখ্যা । মৃদু তানলয়যুক্ত শব্দবহন করিয়া আনিত । শিশুকণ্ঠের অস্পষ্ট আবৃত্তি হইতে ভিন্ন ভাষার সুস্পষ্ট উচ্চারণ আবার একবার সেই পুরাকালের স্মৃতি জাগাইয়া দিয়া যায়। সে শব্দ অধ্যয়ন ও অধ্যাপনার । কারণ এই বাড়িথানি একটি স্কুলবাড়ি বা স্কুল বোর্ডিং । অপরাহ্লের ক্ষীণচ্ছায়া দূরে সরাইয়া ফেলিয়া হ:নভেজ সুৰ্য্যকিরণ দেয়ালের উপর হইতে সরিয়া সরিয়া ক্রমে ছাদের আলিসার উপর –আরও দুরে আরও দূরে সরিতে সরিতে অবশেষে নদীতীরের উচ্চশীর্ষ নারিকেল গাছের মাথার উপর হইতে নদীর শীতল স্থির জলের উপর ছায়। ফেলিয়া দিয়া ওপারের বিস্তীর্ণ বালুকাতারের উপর ছড়াইয়৷ পড়িল ও জলের একটুখানি রোপ্যময় করিয়া তীরের কুড়িপাথর ভাঙ্গা পাত্র ও বালুক (কর্ণায় সেই রশ্মি হীরক খ গুবং জলিতে লাগিল । নদীজলের কোথাও এক খান ভাসন্ত সাদ মেঘে স্বৰ্য্যালোকের লাল ছায় প্রতিবিম্বিত হইয়া উঠিয়াছে কোথাও নীল আকাশের সৌম্যতা স্থির হইয়া মিশিয়া গিয়াছে। শীত সায়াহ্নের অন্ধকার এপারের গাছপালাকে ইহারি মধ্যে কাছে টানিয়া আঁচলে ঢাকিয়া ঘুম পাড়াইতে ব্যগ্র হইয়া উঠিয়াছে। স্কুলের ছেলেদের মধ্যে সকলের ছোটগুলি মিলিয় তাহদের পণ্ডিত মহাশয়কে বুড়ি করিয়া লুকাচুরি খেলিতেছিল। জনকতক বালক ও কয়েকজন যুবক ছাত্র ও মাষ্টারে ফুটবল খেলিবার জন্ত একত্র সমবেত হইয়াছিল। একদিকে কয়েকটি বালকে মিলিয়া কপিচারার তলায় জল দিয়া মাটি নিড়াইয়া দিতে দিতে বটানি এগ্রিকলচার সম্বন্ধে যথাঞ্জান আলোচনা পোষ্যপুত্র। wరిష్టిలి করিতেছিল । সকলেই কার্য্যে নিযুক্ত, উৎসাহপূর্ণ প্রফুল্ল এবং কৰ্ত্তব্যের নিয়ম শৃঙ্খলাপূর্ণ শাসনে সংযত । কেবল রুগ্ন সুধীর একপাশে একটি কাঠের বেঞ্চের উপর বসিয়া বিষঃমুখে চাহিয়া দেখিতেছিল। সে বহুদিন ম্যালেরিয়া ভুগিয়া জরগায়েই এখানে আসিয়াছে, প্লীহা যকৃতের আয়তন ঈষৎ হ্রস্ব হইলেও এখনও আরোগ্য পাইতে অনেক বিলম্ব আছে। এই উদ্দীপনাপূর্ণ মুখগুলি তাহার নিরুদ্যম হৃদয়ের ভবিষ্যতের সম্বলস্বরূপ হইলেও বৰ্বমানকে সমধিক পরিমাণে নিরানন্দকর করিয়া তুলিতেছিল। যে কৰ্ম্মহীন । জল দেওয়া হইয়া গেছে ; ওদিকে একটা হৈচৈ পড়য়া গিয়াছিল তাহাও আবার থামিয়া গিয়ছে, ননা ‘চোর’ হইয়। রাগিয়া গিয়াছিল বুড়ি তাহাদের সে কেন্দল মিটাহয় দিয়াছেন। ঠিক হইয়। গিয়াছে লনী কাপুরুষের মতন পলাইয়া আত্মরক্ষণ না করিয়া সম্মুখ বিচারে আত্মসমৰ্থন কারবে । ছ একটি ক্রীড়াশ্রান্ত বালক নূতন দলের উপর ভার দিয়া ক্রীড়াস্থল ত্যাগ করিয়৷ একটু দূরে একখানা বেঞ্চের উপর আসিয়া বসিল। স্বাস্থ্য ভাল নয় বণিয়া ইহাদের বেশিক্ষণ থেলিতে নিষেধ আছে । নলিন এদিক ওদিক চাহিয়া দেখিয়া অন্ত এক জনকে প্রশ্ন করিল “কৈ হে গুরুদেবকে যে আজ দেখচি না ?” নলিন গুরুদেব বলার গোন্তটুকু সহজে দমন করিতে পারিত না— তাই তাহার গুরুদেবের অপছন্দ স্বত্বে ও সকল ছেলেদের মধ্যেই এই শব্দটার প্রচলন করিয়া তুলিয়া ছিল। সতীশ বলল “আজ স্বামীজি এলেচেন,
পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৪১২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/8/84/%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A7%80_%E0%A6%AC%E0%A7%88%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%96-%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A8_%E0%A7%A7%E0%A7%A9%E0%A7%A7%E0%A7%AD.djvu/page412-1024px-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A7%80_%E0%A6%AC%E0%A7%88%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%96-%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A8_%E0%A7%A7%E0%A7%A9%E0%A7%A7%E0%A7%AD.djvu.jpg)