পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৪১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা। খানি দেখা দিয়েছিল সেই আলো আজ প্রদীপের বাতির মুখে ধ্রুবতর হয়ে জলে উঠেছে। কিন্তু একথা তোমাদের কাছে নিঃসন্দেহই অগোচর নেই যে, এই নূতন জীবনকে তামি শিশুর মত আশ্রয় করেছিমাত্র বয়স্কের মত একে আমি অধিকার করতে পারিনি। তবু আমার সমস্ত দ্বন্দ্ব এবং অপূর্ণতার বিচিত্র অসঙ্গতির ভিতরেও আমি তোমাদের কাছে এসেছি সেটা তোমরা উপলব্ধি করেছ – একটি মঙ্গললোকের সম্বন্ধে তোমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমি তোমাদের অপেন হয়েছি সেইটে তোমরা হৃদয়ে জেনেছ এবং সেই জষ্ঠেই আজ তোমর। আমাকে নিয়ে এই উংসবের আয়োজন করেছ একথা যদি সত্য হয় তবেই আমি আপনাকে ধন্ত বলে মনে করব ; তোমাদের সকলের আনন্দের মধ্যে আমার নুতন জীবনকে সার্থক বলে জানব । এই সঙ্গে একটি কথা তোমাদের মনে করতে হবে, যেলোকের সিংহদ্বারে তোমরা সকলে আত্মীয় বলে আমাকে আজ অভ্যর্থন করতে এসেছ, এলোকে তোমাদের জীবন ও প্রতিষ্ঠালাভ করেছে নইলে আমাকে তোমরা আপনার বলে জানতে পারতে না। এই আশ্রমটি তোমাদের দ্বিজত্বের জন্মস্থান । ঝরণাগুলি যেমন পরস্পরের অপরিচিত নানামুদুর শিখর থেকে নিঃস্থত হয়ে একটি বুহ২ধারায় সম্মিলিত হয়ে নদী জন্মলাভ করে --তোমাদের ছোট ছোট জীবনের ধারাগুলি জন্মোৎসব । ర్చి তেমনি কত দূরদূরান্তর গৃহ থেকে বেরিয়ে এসেছে—তারা এই আশ্রমের মধ্যে এসে বিচ্ছন্নতা পরিহার করে একটি সম্মিলিত প্রশস্ত মঙ্গলের গতি প্রাপ্ত হয়েছে। ঘরের মধ্যে তোমরা কেবল ঘরের ছেলেটি বলে আপনাদের জানতে-–দেই জানার সঙ্কীর্ণতা ছিন্ন করে এখানে তোমরা সকলের মধ্যে নিজেকে দেখতে পাচ্চ—এমনি করে নিজের মহত্তর সত্তাকে এখানে উপলব্ধি করতে আরম্ভ করেছ এই হচ্চে তোমাদের নবজন্মের পরিচয় । এই নবজন্মে বংশগেীরব নেই, আত্মাভিমান নেই, রক্ত সম্বন্ধের গণ্ডি নেই, আত্মপরের কোন সঙ্কীর্ণ ব্যবধান নেই ; এখানে তিনিই পিতা হয়ে প্রভু হয়ে আছেন, “য একঃ” যিনি এক, “অর্ণঃ,” যার জাতি নেই, “বর্ণন অনেকান নিহিতাথে। দধাত,” যিান অনেক বর্ণের অনেক নিগূঢ়নিহত প্রয়োজন সকল বিধান করচেন,—"বচৈত চান্তে বিশ্বমাদেী,” বিশ্বের সমস্ত আরস্তে ও যিনি পরিণামেও যিনি, "দেবঃ” সেই দেবতা। "নোবুদ্ধ শুভয় সংযুক্ত.।” তিনি আমাদের সকলকে মঙ্গল বুদ্ধির দ্বারা সংযুক্ত করুন। এই মঙ্গললোকে স্বাথরুদ্ধি নয়, বিষয় বুদ্ধি নয়, এখানে আমাদের পরম্পরের যে যোগসম্বন্ধ সে কেবলমাত্র সেই একের বোধে অমু প্রাণিত মঙ্গলবুদ্ধির দ্বারাই সম্ভব । ২৫শে বৈশাখ ১৩১৭ ঐরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।