পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৪২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

وان 8e হিংসার বশবৰ্ত্তী হইয়া তিনি রাজকুমারকে যাদু করিলেন। অপরে যখন এরূপ গুণবান জামাত লাভের জন্য রাজার সৌভাগ্যের প্রশংসাকরিত, রাণী হিসাংয় হাসিয়া বলিতেন, *আগে দেখি মেয়ে তার রূপবান স্বামীকে কি রকম পছন্দ করে।” ধাহা হউক শুভদৃষ্টির দিনে সমস্ত ক্রিয় কৰ্ম্ম সম্পূর্ণ হইলে পর রাজা নিজে রাজকুমারের হাত ধরিয়া পরদার নিকটে লইয়া গিয়া ভিতরে ঠেলিয়া দিলেন । এই পরদার পিছনে রাজকুমারী দাড়াইয়া ছিলেন। তার পর যা ঘটিল তাহাতে সকলেই ভীত ও বিস্মিত হইলেন। রাজকুমারকে ঠেলিবামাত্র পর্দার পশ্চাৎ হইতে একটা ভীত ক্ৰন্দনধ্বনি উঠিল এবং রাজকুমারী বলিয়া উঠিলেন—“হায় পিতঃ, এ কাহাকে আপনি আমার স্বামী মনোনীত করিয়াছেন ? এ অামাকে আলিঙ্গন করিবে কি করিয়া ? এ যে কুষ্ঠরোগগ্ৰস্ত!” রাণীর মন্ত্রবলে এই ব্যাপার ঘটিয়াছিল । রাজকুমার যখন পর্দার ভিতর হইতে বাহির হইয়া আসিলেন, সকলে আশ্চর্য হইয়া দেখিল তাহার বুকের পরিচ্ছদ ছিন্ন এবং অঙ্গে শ্বেত কুষ্ঠের চিহ্ন ! এই দেখিয়া রাজা ক্রোধে ও ক্ষোভে তাহাকে অনুচরবর্গ সহ বনের মধ্যে তাড়াইয়া দিলেন। অনেক দিন বনে বনে ঘুরিয়া—এবং বন্যপশু ও দস্থ্যদের হস্তে অনেক অনুচর হারাইয়া, শেষে একদিন শ্রান্তদেহে ক্লিষ্টমনে যুবরাজ এই স্থানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। বহুদিন স্নানাদি না করিয়া যুবরাজের বড়ই কষ্ট হইতেছিল। সেইজন্ত আহারের পর ভৃত্যদিগকে নিকটস্থ কোন স্থান হইতে জল আনিতে আদেশ করিলেন। জলাভাবে ভারতী । ভাদ্র, ১৩১৭ কুষ্ঠের ক্ষতগুলি শুকাইয় বড়ই কষ্ট দিতেছিল। ভূত্যের বহুক্ষণ ধরিয়া চতুর্দিকে জল অন্বেষণ করিল, কিন্তু কোথাও একটু নিৰ্ম্মল জল খুজিয়া পাইল না। শেষে অনেক কষ্টে এক মহিষেব ডোবা হইতে এক ভাড় কাদামাখা জল লইয়া আসিল । সেই জলেই রাজকুমার পা ধুইলেন। কি আশ্চৰ্য্য ! তার সেই কুষ্ঠের চিহ্ন সব মিলাইয়া গিয়া তাহার অঙ্গ বেশ সুস্থের স্তায় বোধ হইতে লাগিল। এই দেখিয়া রাজকুমার বুঝিলেন যে কোন দেবতা নিশ্চয়ই র্তাহার উপর দয়াপরবশ হইয়া এইরূপ করিয়াছেন। তিনি স্বয়ং তখন সেই ডোবার নিকট আসিয়া মহাদেবের উপাসনা পূৰ্ব্বক সেই কর্দমাক্ত জলে স্নান করিলেন এবং তৎক্ষণাৎ রোগমুক্ত হইলেন। কিন্তু তবু তার কষ্টের শেষ হইল না। অনেক মাস ধরিয়া অনুচরদিগকে লইয়। যুবরাজ গভীর বনের মধ্যে দৈত্য ও পশুদিগের সহিত যুদ্ধ করিয়া বেড়াইতে লাগিলেন,— কখনও বনের মধ্যে হারাইয়া যাইতেছেন, কখনও জলের মধ্যে ডুবিয়া যাইতেছেন, কখনও ভয়ঙ্কর সৰ্পের মুখে পড়িতেছেন, আবার কখনও দস্থ্যহস্তে পড়িতেছেন । ক্রমে র্তাহার সেই অসংখ্য অমুচরের মধ্যে একে একে সকলেই মরিয়া গেল। কেবল রাজপুত্র স্বয়ং ও দুইটি অতি বিশ্বস্ত অমুচরমাত্র জীবিত রছিলেন । শেষে এই তিনটিতেও যখন জীবনের আশা ছাড়িয়া দিয়া সেই গভীর অরণ্যের মধ্যেই মৃত্যু স্থির করিলেন, তখন একদিন হঠাৎ একটা ফাক জায়গায় আসিয়া বহুদিনের পরে সুর্য্যালোক দেখিতে