পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৪৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা । সাধনের সুচনা হইলেও তৎকালে জনসাধারণের রুচি প্রবৃত্তির কোন বিশেষ পরিবর্তন দেখা যায় নাই। কিন্তু একথা অবশুই মানিতে হইবে যে এই মহাত্মার সময় হইতেই বঙ্গভাষা ধীরে ধীরে উন্নতির পথে অগ্রসর হইতে আরম্ভ করিয়াছিল। র্তাহার পরলোক গমনের কিছুকাল পরে পণ্ডিতাগ্রগণ্য দয়ার সাগর বিদ্যাসাগর মহাশয় ও সুপণ্ডিত অক্ষয়কুমার দত্ত মহাশয় বঙ্গভাষার উৎকর্ষ সাধনে বঙ্গসাহিত্যের সেবায় নিযুক্ত হন। পণ্ডিত অক্ষয়কুমার দত্ত একজন চিন্তাশীল লেখক ছিলেন ; তাহার সুনাম শিক্ষিত সমাজে শীঘ্রই প্রচারিত হইয়াছিল। এই সময় আদি ব্রাহ্মসমাজ হইতে তত্ত্ববোধিনী পত্রিক প্রকাশিত হইতে আরম্ভ হয় । তিনি ক্রমান্বয়ে দ্বাদশবর্ষকাল দক্ষতার সহিত উহার পরিচালন কার্য্যে নিযুক্ত ছিলেন। তাহার গভীর চিন্তাপূর্ণ বিবিধ ধৰ্ম্মনৈতিক প্রবন্ধে উক্ত পত্রিক সুশোভিত হইয়া বঙ্গভাষার বিশেষ উৎকর্য সাধন করিয়াছিল । দুঃখের বিষয় এই যে তৎকালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার দ্যায় একখানি ধৰ্ম্মতত্ত্ব বিষয়ক উৎকৃষ্ট মাসিক পত্রিকার পাঠকসংখ্যা অতি অল্পই ছিল । বিদ্যাসাগর মহাশয় অধিকতর পরিমার্জিত ও কথঞ্চিৎ প্রাঞ্জল ভাষায় গ্ৰন্থ রচনা করিয়া পাঠকগণের রুচি উন্নতির পথে লইয়া গিয়াছিলেন। তক্ষুবুদ্ধিসম্পন্ন প্যারীচাঁদ উল্লিখিত মহাত্মান্বয়ের রচিত গ্রন্থের ভাষার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখিয়াছিলেন। ইংরাজি ভাষায় তিনি সুপণ্ডিত ছিলেন। ক্যালকাটা রিভিউ, বেঙ্গল হরকরা ও হিন্দু পেটিয়ট প্রভৃতি নানা ইংরাজি পত্রে তিনি বিস্তর বঙ্গসাহিত্যে প্যারীচাঁদ । 8ર જે সার-গর্ভ প্রবন্ধ লিখিতেন। তৎপ্রণীত কতিপয় ইংরাজীগ্রন্থ হইতেও বেশ বুঝা যায় যে, তিনি ইচ্ছা করিলে তাহার সমসাময়িক লেখকদিগের দ্যায় আজীবন ইংরাজী ভাষায় গ্রন্থ লিখিয়া যশস্বী হইতে পারিতেন । কিন্তু সহৃদয় প্যারীচাঁদ সেই প্রশংসা লাভের জন্তে ব্যাকুল হন নাই। মাতৃভাষার দুৰ্গতি ও বঙ্গসাহিত্যের দীনত দেখিয়াই তাহার হৃদয় ব্যাকুল হইয়াছিল। এজন্য র্তাহার সময়ে বাঙ্গালা ভাষায় প্রবন্ধ রচনা কিছুমাত্র সম্মান বা গৌরবের বিষয় না হইলেও তিনি সৰ্ব্বাস্তঃকরণে মাতৃভাষার পরিচর্য্যায়, বঙ্গসাহিত্যের উন্নতি সাধনে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। বাঙ্গালীর পক্ষে বাঙ্গালা ভাষার পরিচর্য্যা যে কত