পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৪৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

89e মুখের ও কত গৌরবের বিষয় তাহা তিনি প্রাণ ভরিয়া উপলব্ধি করিয়াছিলেন ; এ জন্ত তিনি বঙ্গসাহিত্যে অভিনব প্রাণ, নবীন আলোক ও নূতন মাধুৰ্য্য ঢালিয়া দিয়া উহার প্রকৃত উন্নতির পথ প্রসারণে হৃদয়ের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করিয়াছিলেন । ১৮৫৪ খৃঃ অবে তিনি তদীয় বন্ধু রাধানাথ শিকদারের সহিত তৎকালের উপযোগী সহজ চলিত ভাষায় লিখিত লিবিধ বিষয়ক প্রবন্ধ পূর্ণ একখানি মাসিক পত্রিক প্রকাশ করেন। উহার নাম “মাসিক পত্রিকা” দিয়া তিনি স্বয়ং উহাতে নিয়মিত রূপে লিখিতে আরম্ভ করেন। তিনি পূৰ্ব্ব হইতে জানিতেন যে র্তাগর অবলম্বিত ভাষা সংস্কৃতমূলক সাধুভাষাপ্রিয়পণ্ডিত ও লেখকদিগের অনুরাগ আকর্ষণে সক্ষম হইবে না ; পক্ষান্তরে অনেক সংস্কৃতভিমানী ব্যক্তি উহার তীব্র সমালোচনা করিবেন। তথাপি তিনি বিন্দুমাত্র বিচলিত ং ন নাই। পত্রিকার শীর্ষস্থানে নিম্নলিখিত বিজ্ঞাপন লিখিত থাকিত ;— · “এই পত্রিক সাধারণের বিশেষত; স্ত্রীলোকদিগের জন্ত ছাপা হইতেছে। যে ভাষায় আমাদের সচরাচর কথাবাৰ্ত্ত হয় তাহীতেই প্রস্তাব সকলের রচনা হইবে । বিজ্ঞ পণ্ডিতেরা পড়িতে চান পড়িবেন, কিন্তু তাহাদিগের নিমিত্ত এই প্রবন্ধ লিখিত হইতেছে না।” উল্লিখিত কৈফিয়েৎ দিয়া তিনি কথোপকথনের ভাষায় প্রবন্ধ রচনায় প্রবৃত্ত হইলেন। পত্রিকার প্রথম খণ্ড হইতেই তাহার সুপ্রসিদ্ধ “আলালের ঘরের দুলাল” নিয়মিত রূপে প্রকাশিত হইতে আরম্ভ হইল । এস্থলে একথা উল্লেখ করা অসঙ্গত হইবে না ষে, স্ত্রীশিক্ষার প্রতি র্তাহার প্রবল ভারতী । ভাদ্র, ১৩১৭ অনুরাগ ছিল । তিনি তাহার সহধৰ্ম্মিণীকে প্রকৃত প্রস্তাবে তাহার শিক্ষা, চিন্তা ও সাধনার প্রিয় সহচরী করিবার জন্ত সৰ্ব্বাস্তঃকরণে যত্নবান ছিলেন । বঙ্গের গৃহলক্ষ্মীগণের সুশিক্ষা বিধান ও শিক্ষার সহায়তা করা উক্ত মাসিক পত্র প্রচারের অন্যতম উদেণ্ড ছিল। মাসিকপত্র প্রকাশের কিছুকাল পরেই প্যারীচঁাদ স্বীয় নামের পরিবর্তে “টেকচাদ ঠাকুর” এই কল্পিত নাম দিয়া “আলালের ঘরের দুলাল” “মদ খাওয়া বড় দায় জাত থাকার কি উপায়,” “রামা রঞ্জিক”,” “যৎকিঞ্চিৎ”, “অভেদী” প্রভৃতি কয়েকখানি উৎকৃষ্ট গ্রন্থ প্রণয়ন করিয়াছিলেন। রজনীর প্রগাঢ় অন্ধকারের পর উষার মধুর আলোক যেমন পথভ্রান্ত পথিককে আশ্বস্ত ও উৎসাহিত করে, মহাত্মা প্যারীচাদের প্রবৰ্ত্তিত তরল অথচ আবেগময়ী ভাষা তেমনই সন্দেহাকুল সাহিত্য-সেবিগণের সম্মুখে নুতন আলোক আনিয়া তাহাদের গন্তব্যপথ অবধারণে বিশেষ সহায়তা দান করিল। ইহার পূৰ্ব্বে সংস্কৃতাভিমানী বিজ্ঞপণ্ডিতগণের অবলম্বিত কর্কশ ভাষা এবং মহাত্মা বিদ্যাসাগর ও অক্ষয়কুমার দত্ত মহাশয় প্রমুখ লেখকগণের অপেক্ষাকৃত অধিকতর পরিমার্জিত ভাষা লইয়া ভিন্ন ভিন্ন রুচির পাঠক, লেখক ও সমালোচকগণের মধ্যে বিষম মতভেদ ও বিবাদ বিসম্বাদ চলিতেছিল । কত সমালোচনা, কত উপহাস কত শ্লেষপূর্ণ বিদ্রুপ স্রোতের ন্তায় অবাধে চলিয়াছিল, কিন্তু কোন পক্ষই সন্তোষজনক সিদ্ধান্তে উপস্থিত হইতে পারেন নাই। এই সময় “আলালের ঘরের দুলালের” আড়ম্বর