পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

WEI o ভারতী । সামান্ত অর্থাভাবে সৎকার করিতে পারিতেছি না, রাত্রি প্রভাতের পূৰ্ব্বে নিমতলার ঘাটে শব সৎকার না করিলে আমার চোঁদপুরুষ নরকগামী হইবে, আপনার এ ব্রাহ্মণের উদ্ধার না করিলে আর কাহার নিকট গিয়া দাড়াইব” ইত্যাদি বাক্যে ভিক্ষাবৃত্তি চালাইত। . কয়েক বৎসর পূৰ্ব্বে শিয়ালদহ ষ্টেশন হইতে শেষ রাত্রির গাড়ীতে যাহার একাধিকবার যাতায়াত করিয়াছেন তাহারাই ইহা বেশ গ্রানেন । দ্বিতীয় ভিক্ষুক লালবাজারের পুলিশ আদালতের মোড়ে । ইনি পরিষ্কার ভদ্রবেশধারী, ইহাব অভাব অন্ত রকম, ইনি বলিতেন “মহাশয় আমি ব্রাহ্মণ, ভদ্রলোক, আমি মফস্বল হইতে কলিকাতায় আসিয়া ছিলাম, ভিড়ের ভিতর আমার মণি-ব্যাগটি অপহৃত হইয়াছে, এখন অর্থাভাবে গ্রামে ফিরিতে পারিতেছি না, শ্রামবাজারে আমার এক আত্মীয় আছেন, তাহার. নিকট হইতে রেলভাড়া লইয়া দেশে ফিরিবার মনন করিয়াছি, এখন কয়েকটা পয়সা পাইলে ট্রামে শু্যামবাজার আত্মীয়ের নিকট উপস্থিত হইতে পারি, তাই আপনার অনুগ্রহ প্রার্থন করিতেছি।” ঠিক সেই ব্যক্তিকে আমি গড়ের মাঠের পথে তিন দিন ঐ ভাবে ভিক্ষা করিতে দেখিয়াছি। সবদিনই ঠিক এক রকম বক্তৃত। প্রথম দিবস আমি কিঞ্চিৎ সাহায্য করিয়াছিলাম। তারপর দুই দিন তিরস্কার করিয়াই তাড়াইয়াছি। ভিক্ষায় মানের হ্রাস হয়। বাস্তবিক জাপানীরা ভিক্ষাবৃত্তিকে নিরতিশয় ঘৃণা করিয়া থাকে । একদিন এক জাপানী বৈশাখ, ১৩১৭ কোন ইউরোপীয় প্রবাসীর বাড়ীতে ভিক্ষার্থী হইয় গমন করে। তথায় গৃহস্বামীকে উপস্থিত না পাইয় তাহার টেবিলের উপর একখান! কাগজে আপন অবস্থা বিশদভাবে বিবৃত করিয়া চলিয়া আইসে । বারাস্তরে গিয়া প্রদত্ত সাহায্য গ্রহণ করিবে বলিয়া গৃহস্বামীকে উহ। তাহার চাকরের নিকট রাথিতে উক্ত আবেদন পত্রেই অনুরোধ করে। বৈদেশিক গৃহস্বামী গৃহে ফিরিয়াই টেবিলের উপর ভাঙ্গা ইংরাজীতে লিখিত আবেদনখানি দেখিতে পান। তিনি জাপান টাইম্স নামক পত্রিকায় বিষয়টা সৰ্ব্বসমক্ষে উপস্থিত করেন। পরদিন তোকিওর প্রধান প্রধান সংবাদপত্রে উহার প্রতিবাদ বাহির হয় । সকলেই সমস্বরে বলিয়া উঠেন যদি ঘটনা সত্য হয় তবে ঐ প্রার্থীকে আমরা জাপান জাতির লোক বলিয়া গণ্য করিতে পারি না ; পবিত্র জাপানীরক্ত উহার ধমণীতে প্রবাহিত হয় না। এমন নীচমনা ব্যক্তি জাপানের তjজ্য সস্তান ৷ - গত যুদ্ধের পর জাপানের উত্তর পুৰ্ব্ব প্রদেশের ছেন্দাই, মোরিওক এবং আওমোরি নামক তিনটি জেলায় দুর্ভিক্ষ আরম্ভ হয়। খৃষ্টান পাদরিগণ এবং জাপান গবর্ণমেণ্টের নিয়োজিত ব্যক্তিগণ লোকের দুরবস্থার কথা শুনিয়া তদারকে বাহির হন। ছেন্‌দাই নামক জেলাতেই দুর্ভিক্ষের প্রকোপ সব চেয়ে বেশী ছিল। কয়েকজন ইউরোপীয়ান এবং আমেরিকান সাহেব সাহায্য করিবার উদ্বেত্ত্বে প্রত্যেক বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়া গ্রামের কোন ব্যক্তির থান্তাভাব, তৎসম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন ।