পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৫০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, ষষ্ঠ সংখ্যা । বক্তব্য । 8切● বক্তব্য । - “ভারত ও বিলাত” সম্বন্ধে বিপিনবাবু যাহা লিখিয়াছেন, তাহাতে তিনি আমাদের যে দুৰ্ব্বলতাটির প্রতি নির্দেশ করিয়াছেন, সে বিষয়ে আমাদের ভাবিবার ও শিথিবীর অনেক বিষয় আছে। কিন্তু স্থানে স্থানে আমরা তাহার যুক্তির ঠিক অনুসরণ করিতে পারিলাম না। ভারত ও বিলাতের সভ্যতা লইয়া তিনি যে সমালোচনা করিয়াছেন তাহার মধ্যে র্তাহার অনেকগুলি কথা পড়িলে মনে কেমন একটা সন্দেহ আসিয়া উপস্থিত হয় যেন যাহা কিছু স্বদেশী তাহার ষোল আনার সমর্থন করাই তাহার আস্তরিক উদ্দেশু । আমাদের এ ধারণা ভ্ৰমাত্মক বলিয়া জানিতে পারিলে সুখী হইব। বিপিনবাবু তাহার প্রবন্ধে এমন কতকগুলি কথার অবতারণা করিয়াছেন, যাহা হয় ত’ তাহার অজ্ঞাতে ও অনিচ্ছাক্রমেই ঈষৎ পক্ষপাতিতার বর্ণে রঞ্জিত হইয়া উঠিয়াছে। সেই সকল স্থানগুলি নির্দেশ করিয়া তাহার প্রতি প্রবন্ধলেখকের মনোযোগ আকর্ষণ করাই আমাদের উদ্দেশু । •তিনি বলিতেছেন আমরা "য়ুরোপীয় সভ্যতাকে সাৰ্ব্বজনীন সভ্যতার অাদর্শ বলিয়া গ্রহণ করিয়াছিলাম।” যদি তাহা করিয়া থাকি তাহ হইলে ভুল করিয়াছি সন্দেহ নাই। যাহা নির্দোষ, যাহা সম্পূর্ণ, যাহা সৰ্ব্বতোভাবে সৰ্ব্বকালে ও সৰ্ব্ব দেশে সত্য, তাহাই সাৰ্ব্বজনীন আদর্শ হইবার যোগ্য—সৰ্ব্বলোকের বরণীয় ও গ্রহণীয়। এই দিক দিয়া বিচার করিয়া দেখিলে শুধু যুরোপের কেন, পৃথিবীর কোন দেশেরই সভ্যতা সাৰ্ব্বজনীন আদর্শ হইবার যোগ্য নহে। ব্যক্তিগত চরিত্রের সাৰ্ব্বজনীন আদর্শ যেমন কোন ব্যক্তিবিশেষের মধ্যে সমগ্রভাবে পাওয়া অসম্ভব, বিভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে বিভিন্ন গুণের আদর্শ অনুসন্ধান করা আবশ্যক ; জাতিগত ভাবেও তেমনি কোন ও জাতিবিশেষের মধ্যে সাৰ্ব্বজনীন আদর্শ খুজিয়া পাওয়া অসম্ভব,— তা সে যুরোপেই হউক আর এসিয়াতেই হউক, ইংলণ্ডেই হউক আর ভারতেই হউক । মচুন্যত্বকে সম্পূর্ণ করিতে হইলে যে সমগ্র মনুষ্যসমাজের নিকটে যাইয়া দাড়াইতে হইবে, শ্রেণীবিশেষের মধ্যে বদ্ধ থাকিলে চলিবে না, সে কথা বোধ হয় আর কাহাকেও বলিয়৷ দিতে হইবে না । সংসারের সব ভাল কাহারও একচেটিয়া সম্পত্তি নহে। ভাল—কিছু বা আমার আছে, কিছু বা তোমার আছে, কিছু বা অপরের আছে। ইহাই জগতের চিরন্তন সত্য। বিপিনবাবু ইতিপূৰ্ব্বে নিজেই এ কথা স্বীকার করিয়া গিয়াছেন। সেইজন্ত আমাদের ধৰ্ম্ম শ্রেষ্ঠ বলিয়া যে অনিবাৰ্য্য সত্যরূপে আমাদের সমাজের সকল ব্যাপার শ্রেষ্ঠ হইতেই হইবে, স্বষ্টিনিয়মে এরূপ কথা কোথাও লেখা নাই। সমাজ ইত্যাদি সকল বিষয়েই আমাদের উন্নতির মূলে শিক্ষা অর্থাৎ জ্ঞান। সেই শিক্ষার আবার দুই পথ, – দেখা আর ঠেক। এই দেখা ও ঠেকার ফলেই দিনে দিনে যুগে যুগে তিল তিল করিয়া সভ্যতা ও সমাজ পরিবৰ্ত্তিত ও পরিপুষ্ট আকারে উন্নত হইয় উঠে ! কিন্তু এই উন্নতির ফলে আজ কি সমাজ