পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, প্রথম সংখ্যা । মধ্যে নিশ্চয় অনুভব করে তার একটা দাড়াবার জায়গা আছে, পৌছবার স্থান আছে। প্রত্যক্ষ ফল সে না দেখতে পেলেও সে মনে মনে জানে ফল থেকে সে বঞ্চিত হয় নি-বিরুদ্ধ ফল পেলেও সেই বিরুদ্ধতাকে সে একান্ত করে দেখে না, তার ভিতর থেকেও একটি সার্থকতার প্রত্যয় মনে থাকে। একটি অত্যন্ত বড় জায়গায় চিত্তের দৃঢ়নির্ভরতা, এই জায়গাটিকে ধ্রুবসত্য বলে অভ্যস্ত স্পষ্টভাবে উপলব্ধি করা, এই হচ্চে সেই বিশ্বাস যে মাটির উপরে আমাদের ধৰ্ম্মসাধন প্রতিষ্ঠিত। এই বিশ্বাসটির মূলে একটি উপলব্ধি আছে। সেটি হচ্চে এই যে, ঈশ্বর সত্য । কথাটি শুনতে সহজ, এবং শোনবামাত্রই অনেকে হয় ত বলে উঠবেন যে, ঈশ্বর সত্য এ কথা ত আমরা অস্বীকার করিনে । পদে পদেই অস্বীকার করি । ঈশ্বর সত্য নন এষ্টভাবেই প্রতিদিন আমরা সংসারের কাজ করে থাকি। ঈশ্বর সত্য এই উপলব্ধিটির উপরে আমরা ভর দিতে পারিনে । আমাদের মন সেই পৰ্য্যস্ত পৌছে সেখানে গিয়ে স্থিতি করতে পারে না । আমার যাই ঘটুক না কেন, যিনি চরম সত্য পরম সত্য তিনি আছেন, এবং তার মধ্যেই আমি আছি, এই ভরসাটুকু সকল অবস্থাতেই যার মনের মধ্যে লেগেই আছে, সে ব্যক্তি যেমন ভাবে জীবনের কাজ করে আমরা কি তেমন ভাবে করে থাকি ?— আছেন, আছেন, তিনি আছেন, তিনি আমার হয়েই আছেন—সকল দেশে সকল কালেই তিনি আছেন এবং তিনি আমারই আছেন— জীবনে যত উলটপালটই হোকু এই সত্যটি রসের ধৰ্ম্ম । ©ፃ থেকে কেউ আমাকে কিছুমাত্র বঞ্চিত করতে পারবে না এমন জোর এমন ভরসা যার অাছে সেই হচ্চে বিশ্বাসী—তিনি আছেন এই সত্যের উপরেই সে বিশ্রাম করে এবং তিনি আছেন এই সত্যের উপরেই সে কাজ করে। কিন্তু ঈশ্বর যে কেবল সত্যরূপে সকলকে দৃঢ় করে ধারণ করে রেখেছেন, সকলকে আশ্রয় দিয়েছেন এই কথাটিই সম্পূর্ণ কথা নয় । এই জীবধাত্রী পৃথিবী খুব শক্ত বটে—এর ভিত্তি অনেক পাথরের স্তর দিয়ে গড় । এই কঠিন দৃঢ়তা না থাকূলে এর উপরে আমরা এমন নিঃসংশয়ে ভর দিতে পারতুম না। কিন্তু এই কাঠিন্তই যদি পৃথিবীর চরমরূপ হত তাহলে ত এ একটি প্রস্তরময় ভয়ঙ্কর মরুভূমি হয়ে থাকৃত। এর সমস্ত কাঠিন্তের উপরে একটি রসের বিকাশ আছে—সেইটেই এর চরম পরিণতি । সেটি কোমল, সেটি সুন্দর, সেটি বিচিত্র। সেইখানেই নৃত্য, সেইখানেই গান, সেইখানেই সাজসজ্জা । পৃথিবীর সার্থকরূপটি এইখানেই প্রকাশ পেয়েছে । অর্থাৎ নিত্যস্থিতির উপরে একটি নিত্যগতির লীলা না থাকুলে তার সম্পূর্ণতা নেই। পৃথিবীর ধাতু পাথরের অচল ভিত্তির সৰ্ব্বোচ্চ তলায় এই গতির প্রবাহ চলেছে, প্রাণের প্রবাহ, যৌবনের প্রবাহ, সৌন্দর্য্যের প্রবাহ --তার চলা-ফেরা আসাযাওয়া মেলামেশার অfর অন্ত নেই। রস জিনিষটি সচল ;–সে কঠিন নয় বলে, নম্র বলে, সৰ্ব্বত্র তার একটি সঞ্চার আছে ; এইজন্তেই সে বৈচিত্র্যের মধ্যে হিল্লোলিত হয়ে