পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8९ ভারতী । মিলেছে, প্রয়োজনে মেলেনি, তত্ত্বজ্ঞানে মেলেনি, আচারের শুষ্কশাসনে মেলেনি। ধৰ্ম্মের যখন চরম লক্ষ্যই হচ্চে ঈশ্বরের সঙ্গে মিলনসাধন, তখন সাধককে এ কথা মনে রাখতে হবে যে, কেবল বিধিবদ্ধ পূজাৰ্চনা আচার অনুষ্ঠান শুচিতার দ্বারা তা হতেই পারে না । এমন কি, তাতে মনকে কঠোর করে ব্যাঘাত আনে এবং ধাৰ্ম্মিকতার অহঙ্কার জাগ্রত হয়ে চিত্তকে সঙ্কীর্ণ করে দেয়। হৃদয়ে রস থাকূলে তবেই তার সঙ্গে মিলন হয়, আর কিছুতেই হয় না । কিন্তু এই কথাটি মনে রাখতে হবে, ভক্তিরসের প্রেমরসের মধ্যে ষে দিকটি সম্ভোগের দিক্‌ কেবল সেইটিকেই একান্ত করে তুললে দুৰ্ব্বলতা এবং বিকার ঘটে। ওর মধ্যে একটি শক্তির দিক্‌ আছে সেট না থাকূলে রসের দ্বারা মনুষ্যত্ব দুৰ্গতি প্রাপ্ত ६% । ভোগই প্রেমের একমাত্র লক্ষণ নয়। প্রেমের একটি প্রধান লক্ষণ হচ্চে, এই যে, প্রেম আনন্দে দুঃখকে স্বীকার করে নেয় । কেন না দুঃখের দ্বারা ত্যাগের দ্বারাই তার পুর্ণ সার্থকতা। ভাবাবেশের মধ্যে নয়, সেবার মধ্যে কৰ্ম্মের মধ্যেই তার পুর্ণ পরিচয় । এই দুঃখের মধ্যে দিয়ে কৰ্ম্মের মধ্যে দিয়ে, তপস্তার মধ্যে দিয়ে যে প্রেমের পরিপাক হয়েছে সেই প্রেমই বিশুদ্ধ থাকে এবং সেই প্রেমই সৰ্ব্বাঙ্গীণ হয়ে ওঠে। এই দুঃখ স্বীকারই প্রেমের মাথার মুকুট ; এই তার গৌরব । ত্যাগের দ্বারাই সে আগনীকে লাভ করে ; বেদনার দ্বারাই তার রসের মন্থন হয় ; সাধবী সতীকে যেমন বৈশাখ, ১৩১৭ ংসারে কৰ্ম্ম মলিন করে না, তাকে আরো দীপ্তিমতী করে তোলে, সংসারে মঙ্গলকৰ্ম্ম যেমন তার সতীপ্রেমকে সার্থক করতে থাকে, তেমনি যে সাধকেব চিত্ত ভক্তিন্তে ভরে উঠেছে কৰ্ত্তব্যের শাসন তার পক্ষে শৃঙ্খল নয় সে র্তার অলঙ্কার ; দুঃখে তার জীবন নত হয় না, দুঃখেই তার ভক্তি গৌরবান্বিত হয়ে ওঠে। এই জন্তে মানবসমাজে কৰ্ম্মকাণ্ড যখন অত্যস্ত প্রবল হয়ে উঠে মনুষ্যত্বকে ভারাক্রান্ত করে তোলে তখন একদল বিদ্রোহী জ্ঞানের সহায়তায় কৰ্ম্মমাত্রেরই মূল উৎপাটন, এবং দুঃখমাত্রকে একান্তভাবে নিরস্ত করে দেবার অধ্যবসায়ে প্রবৃত্ত হন । কিন্তু ধারা ভক্তির দ্বারা পূর্ণতার স্বাদ পেয়েছেন তারা কিছুকেই অস্বীকার করলার প্রয়োজন বোধ করেন ন!— তবে অনায়াসেই কৰ্ম্মকে শিবেtধার্য এবং দুঃথকে বরণ করে নেন । নইলে যে তাদের ভক্তির মাহাত্মাই থাকে না, নইলে যে ভক্তিকে অপমান করা হয় ; ভক্তি বাইরের সমস্ত অভাব ও আঘাতের দ্বারাই আপনার ভিতরকার পূর্ণ তাকে আপনার কাছে সপ্রমাণ করতে চায়-দুঃখে নম্রতা ও কৰ্ম্মে আনন্দই তার ঐশ্বৰ্য্যের পরিচয় । কৰ্ম্মে মানুষকে জড়িত করে এবং দুঃখ তাকে পীড়া দেয়, রসের আলিভাবে মানুষের এই সমস্তাটি একেবারে বিলুপ্ত হয়ে যায় তখন কৰ্ম্ম এবং দুঃখের মধ্যেই মাসুধ যথার্থ ভাবে আপনার মুক্তি উপলব্ধি করে । বসন্তের উত্তাপে পৰ্ব্বতশিখরের বরফ যখন রসে বিগণিত হয় তখন চলাতেই তার মুক্তি, নিশ্চলতাই তার বন্ধন ; তখন অক্লান্ত আনন্দে দেশদেশান্তরকে উর্বর করে সে চলতে থাকে ; তখন মুড়ি পাথরের দ্বারা সে যতই প্রতিহত