২৮শ'বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা * D .তৃণ পড়িলেও যেন শতথও হয়-জলের ভিতরের গম্ভীর কল্লোল লাইকার কানে বাজিতে লাগিল,—দেহ যেন ক্রমেই নিম্নাভি মুণী হইতেছিল। সে তখন মরণ বলে ঘুরিয়া' আপনাকে ফিরাইল,— শ্বাস রোধ করিয়া ডুবিয়া মাথা দিয়া জল ঠেলিয়া ঘুর্ণার বাহিরে আসিল –তখন হাতে পায়ে জল ঠেলিয়া সে তীরাভিমুখে চলি –তবেও থর স্রোত তরতব বেগে ছুটিতেছে,— জলে দাতার দেওয়া লাইকার নূতন হয়—কিন্তু নিকটের সেই জলাবৰ্ত্তেব ভয়ে সে এখানেও স্থির ভূবে ভার্টুতে পারিল না—বলে জল কাটাইয়া মুহুর্তে তীবে উঠিল,—কিন্তু উঠিয়া দাড়াইতে বা বসিতে পাবিল না—তাহার অবশ" দেহ সেই ভগ্ন প্রবণ তটে লুটাইয়া পড়িল । অনেকক্ষণ সে সেই ভাবেই রহিল, বনমধ্যে মহাশব্দে শৃগালেব দল ডাকিয় গেল, রাত্রি প্রহরাতীত । — ধীরে ধীরে তাহাব দেহে বল আসিতেছিল— এই সময় সে দেখিতে পাইল দূরে গঙ্গাবক্ষে একখানি ক্ষুদ্র নৌকা লিয়াছে—তাহাতে আরোহী বসিয়া আছে, একটি উজ্জ্বল আলোক জলিতেছে। লাইক ভাবিল ইহাদিগকে ডাকি,-কিন্তু তখনই শুনিল তাহার পলিতেছে — “এই আঁধার রাত্রি, লাইক আসুিয়াই আবার চলিয়া গেল কেন বলিতে পাব ?” কয়েকজন অপূরে বলিল-জানি না, কিন্তু আমার বোধ হয় মহারাজ তাহাকে কোন মন্দ কথা বলিয়াছেন বা অপর কোন অপমান করিয়াছেন, শোন নাই কি রাজপুরে কাহারও তাছার নাম করিবার উপায় নাই ?” লাইকা, 8) প্রথম বলিল,—তাছাই ত শুনিয়াছি তবে অtবার এখন— o . e লাইকা আর শুনিতে পাইল না, নীেকা ভাটীর মুখে অনেক দূরে চলিয়া গেল। সে স্তন্ধ হইয়া শুনিভূেছিল—স্বর মৃদ্ধ হইয়া গেল, আর শোনা যায় না;-নৌকা চলিয়া গিয়াছে। তাহার একটি দীর্ঘ নিশ্বাস পড়িল । তখন হাসিয়া লাইকা বলিল, তুচ্ছ জীবনের এত মায়া ?—হায় !—তাহার পর সে আবার একটি নিশ্বাস ফেলিল— ভাবিল এই তুচ্ছ লাইকার জন্ত বিশাল রাজসংসারে এত বিশৃঙ্খলা ?—ন আর এ মুখ এ দেশে দেখাইতে আসিব না !— কিন্তু সেই বালিকা —আবার লাইকার অবশ দেহে রক্তস্রোত স্তিমিত হইল,— সে যেন মস্তকের ভিতর কি অস্বস্তি বোধ করিল, সেই সিক্ত বালুকার উপর তাহার মাথ৷ লুটাইতে লাগিল,—সে জানে যে, সে সম্রাটনন্দিনী, সংসারে তাহার জন্ত একের পরিবর্তে সহস্ৰ মেহদৃষ্টি মিলিবে—কিন্তু ?—এ কিন্তুর মানে কি ?—এ কিন্তুর তুর্থও লাইকা বুঝিল, ইহা আর কিছু নয়—এ কিন্তু এতদিন জন্মায় নাই—যখন রাজা তাহার কস্তাকে ভিখারীর সঙ্গিনী হইতে দিতে আপত্তি প্রকাশ করিলেন,—তখনই ইহা জন্ম হইয়াছে – লাইক বুঝল--আপনার হৃদয়ের প্রতি চাইয় বুঝিল, আজি তাহা শূন্ত -একটি বালিকার কোমল নয়নালোক ব্যতীত তাহার সমস্ত প্রাণ সমস্ত জগৎ আজ নিবিড় অন্ধকার ! একি নিদারুণরূপে সৰ্ব্বনাশ !—রাজভবনের নিবিড় বেষ্টন কল্পনা করিয়াও সে শিহদিল —এখন উপায় ?—অরণ্যবিহারী
পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩২১.djvu/২৪১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।