পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩২১.djvu/২৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বন্দ্ব যুদ্ধ রাত হয়ে এল বলেই অষ্টার লিটজের ' যুদ্ধের বিরাম হল। প্রথমে ২রা ডিসেম্বরের কুয়াশা-অন্ধকার সকাল বেলায়, তার পর যখন স্বৰ্য্যোদয় হল,—যে স্বৰ্য্যকে নেপোলিয়ান চিরকাল বলতেন, অষ্টর লিটজের মহিমাময় স্বৰ্য্য-ক্রমে আবার যখন ছায়া দীর্ঘ হর হয়ে এল— সন্ধিবদ্ধ রুষ এবং অষ্ট্ৰীয়ান সৈন্ত-শ্রেণীর পিছনে, হ্রদ ফুটির উপর দিয়ে তীব্র হিমবাতাস হুহু করে বয়ে এল, তখন পর্য্যন্তও সমর হুহুঙ্কার আর রক্ত-প্লাবনের বিরাম ছিল না । ফরাসী-সাম্রাজ্যের শুেনাঙ্কিত পতাকা বহনকারীকে অনুসরণ করে, জয়শ্ৰী ধীর নিশ্চিত পদেই অগ্রসর হচ্ছিলেন। অষ্ট্ৰীয়ানরা প্রথমেই পালাতে আরম্ভ করেছিল, রুষ-সৈনিকের একাগ্র পৌরুষের সঙ্গে যুদ্ধ করেও যখন কিছুই কর্তে পারলেন না –তখন তারা ক্রমে হ্রদ সীমানার নিম্ন জলাভূমির দিকে তাড়িত হল। তাহাদের সংখ্যা হ্রাস হয়ে আসতে লাগল, তাদের মনের বল ক্ষীণ হল, চারিদিক হতে আক্রান্ত হয়ে তারাও শোচনীয় পরিণামের হাতে আত্মসমর্পণ করলে। . যুদ্ধ-বিরত রত্ন-সৈন্মের এক অংশ কেবল একেবারে উদভ্ৰান্ত হয়নি,মনের ধৈর্য্য আর কাজের নিয়ম রক্ষা করে তারা জমাট বরফের উপর দিয়ে, হ্রদ দুটির মধ্যে যেটি বড়, সেইটি পার হবার চেষ্টা করছিল। পরাভূত শত্রুর জাতীয় গৌরব পতাকায়' পা রেখে, বিজয়ী সেনাপতিপরিবৃত সমগ্র ইউরোপের ভাগ্যবিধাতা, জয়গৰ্ব্বিত থৰ্ব্বাকৃতি কর্সিকান যখন এই দৃঢ় নিষ্ঠ বীর সকলের অসাধ্য সাধন চেষ্টা দেখলেন তখন তার মন সহসা দ্বিধায় কাতর হয়ে উঠল—কিন্তু সে কেবল মুহূৰ্ত্ত কালের জন্তে । যুদ্ধে দয়াব বিধান কোথা ?—ধীরে দূরবীণটি নামিয়ে স্থিব কণ্ঠে, বলেন—“আমার দেহরক্ষক কামানের সৈন্তদের, হ্রদের দিকে মুখ ফিরিয়ে গোল চালাতে বল”। আদেশ পালনের ক্ষণমাত্র বিলম্ব হল না। কামানের নলের মুখে হাল্কা সাদা ধৈায় দেখা দেবার পর, কালো-পোষাক-পরা দৃঢ় শ্রেণীবদ্ধ রুষ-সৈন্ত-দলের মধ্যে ফণক দেখা দিল, যেখানে তিল ধবার ঠাই ছিল না, যেন সেখানে একটি প্রসর পথ রচনা কবে দিলে। একটি, আবার একটি—পথের সংখ্যা ক্রমশঃই বুেড়ে চলল ;–তার পর মনে হল উগ্র সাদা বরফের প্রাগুরের উপর হ্রদের তীব হতে কে যেন কালো কালো ঝোপ বসিয়ে দিয়ে গেছে—সে আর কিছুই নয়, ভূমিশায়ী রুষ-সৈন্ত ! নেপোলিয়ান এই হত্যাদৃপ্ত হতে মুখ ফিরিয়ে তার পাশ্বচর সেনাপতিকে জিজ্ঞাসা করলেন, কর্ণেল আবনে প্রেভষ্ট কোথায় ? লানেস কিম্ব রেসিএর বোধ হয়, বলেন, গোলা চালাবার হুকুম দেবার জন্তে কর্ণেল গিয়েছিলেন, এতক্ষণে ফিরে আসা উচিত ছিল কিন্তু—কথা সমাপ্ত ন করেই তিনি নীরব হলেন । ভাবটা কর্ণেল জীবিত আছেন কি, গ কে জামে ?