२brरै দিন তিনি তাদের পিছে পিছে ছিলেন, আমিও ‘ আমার প্রভুর সঙ্গে সঙ্গে ছিলুম। রক্ষা করুন। হে অসীম প্রতাপশালী , আমার প্রভুকে রক্ষা করুন ! নেপোলিয়ান আরো হয়ে পড়ে, সেই সৈনিকের রক্তসিক্ত স্বন্ধে হাত রেখে বল্লেন,—তাকে রক্ষণ করা যদি আমার সাধ্যে থাকত, তাহলে আমি নিশ্চয়ই করতাম, সে কথা বলাই বাহুল্য। তাকে রক্ষা করতে পারলে লাভ আমারই– কিন্তু ভাই, তিনি যে আমার সাধ্যের বাহিরে চলে গিয়েছেন ।” সৈনিক বিস্মিত কণ্ঠে বলে উঠল— “ফরাসী-সম্রাটের সাধ্যেরও বাহিরে ” নেপোলিয়ান ব্যথিত স্বরে উত্তর করলেন, —“হঁ্যা ভাই, ফরাসী-সম্রাটও সেখানে শক্তি-হীন ।” অরদালি যে, কথা বলেছিল, সে কথা সত্য—আবনে প্রেভষ্ট সেই তুষারস্ত,পের উপরেই ছিলেন। চন্দ্রনক্ষত্রহীন সুদীর্ঘ হিমার্ত রাত্রি ক্রমে অবসান হল। চারিদিকের নিবিড় নীরবতা, ক্ষণে ক্ষণে আহত কাতর স্বরে, দ্বিধাভিন্ন হয়েছিল ; কিন্তু স্তম্ভিত পাষাণ-অচল অন্ধকার কোনও আহতের কোনও ভূষিতের ব্যাকুলতায় মুহুর্তমাত্রও বিচলিতৃ হয়নি। শীতের নিরুদ্যম দিন আবীর ক্রমে উজ্জ্বল হয়ে উঠল । প্রত্যুষে রাত্রির অন্ধকার-কালিমা ক্রমে অপগত হয়ে, যখন ধূসর কুয়াশায় গ্রসর লাভ করছে—ফরাসীসৈনিকবেশধারী একজন যোদ্ধা, অস্তরে একাত্ত বেদনার আঘাতে সচেতন হয়ে জানলেন তিনি তখনও জীবিত আছে। ধীরে ধীরে চক্ষু ছুটি ভারতী श्रांबाक्ल, ১৩২১ উন্মীলন করলেন। প্রথমে একখানি তারপর অন্ত হাতখানি তুলে দেখলেন, ছুখানিই কৰ্ম্মাক্ষম । কপালের জমাট কেশরাশি সরিয়ে দিয়ে একবার ভাববার চেষ্টা করলেন-তিনি কোথায় অাছেন । “কি ভয়ানক ! আমি এ কোথায় আছি !” আমার শীত বোধ হচ্ছে না কেন !” তার চারিদিক ঘিরে ঘন কুয়াশার যবনিকা—কোথাও কিছু দৃষ্টিগোচর হয় না । সেখানে শুয়েছিলেন সেখানে স্থাত দিয়ে দেখলেন ভয়ানক ঠাও ! ভাবলেন এ আবার কি ! তিনি যে বরফের উপর পড়ে আছেন সে কথা তখনে বুঝতে পারেন নি। কত আজগুবি কথাই তার মনের মধ্যে দিয়ে যাওয়া-আসা করতে লাগল। মনে হল, কুয়াশার বাধা ভেদ করে, একটি বহুপরিচিত গানের ছত্র যেন র্তার কানে এসে প্রবেশ করছে । সেই গান সেই সুর তাকে বিচলিত করলে, বার বার চক্ষু মার্জন করলেন, একি স্বপ্ন! একি মায়া –সে গান এখানে কে গাইবে ? কিন্তু আবার যখন স্পষ্ট শুনতে পেলেন তখন আর সংশয় রইল না, সেই সঙ্গে বহুকাল অশ্রুত, প্লিয় একটি নাম শুনলেন। সেই তার নাম, যাকে তিনি বড় ভালবেসেছিলেন; কোনো রমণীর মুকুমার একটি নামূ! সেই চিরপরিচিত, প্রিয় নামটির মৃদু স্পর্শে তার সমস্ত চেতনা জীবন্ত জাগরিত হয়ে উঠল। হাতের উপর ভর দিয়ে উঠে শুনতে লাগলেন ; —জরাতুর উচ্চ তীক্ষ কণ্ঠে কে ডাকছে “নিকলেট”,—“নিকলেট” । তারপর আবার সেই গান আরম্ভ হ’ল, যে গনু সে কতা
পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩২১.djvu/২৮২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।