() ৩৮শ বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা © বিষম আপত্তি উঠিয়াছিল। কিন্তু বলিষ্ঠ প্রকৃতির ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয় যাহা উচিত মনে করিতেন তাছাই করিতেন, কাহারও ভয়ে বা খাতিরে আপনার মতের বিপরীত কাৰ্য্য করিতেন না । হরিবিহারী যখন র্তাহাকে ডাকাইয়া আনিয়া জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন যে ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয় জমিদার-বাড়ীর ভাবী পুরোহিতকে ইংরেজী পড়াইতেছেন কেন, তখন ভট্টাচাৰ্য্য হাসিয়া উত্তর করিয়াছিলেন—আজকালকার যজমানের ইংরেজী শিখিতেছে, আজকালকার শাস্ত্রও অনেকটা ইংরেজী হইয়া উঠিতেছে, মৃত্যুং শিষ্য যজমানের নিকট সম্মান পাইবার যোগ্য হইতে হইলে গুরু পুরোহিতের সংস্কৃত ও ইংরেজী উভয় ভাষারই সকল শাস্ত্রে জ্ঞান থাকা দরকার । হরিবিহীরী কুণে প্রকৃতির লোক। তিনি ভট্টাচার্য্যের সহিত তর্কে প্রবৃত্ত না হইয়া ঐখানেই নিবৃত্ত হইয়া গেলেন• কিন্তু সেই গ্রামেব মোড়ল নিবারণ মুখুয্যে ভট্টাচার্য্যেব মতিচ্ছন্ন হইয়াছে দেখিয়া ঠাঙ্গর সহিত তর্কযুদ্ধ জুড়িয়া দিল— নন্দকিশোর স্মৃতিরত্নেব ছেলে—মুদি মালার ছেলেবু। যা শিখছে তাই শিখবে ? ভট্টাচাৰ্য্য হাসিয়া বলিলেন -শিখবে নাই বা কেন ? জ্ঞানেরও কি জাতিভেদ আছে নাকি ? নিবারণ সোজা হইয়া জোর দিয়া বলিল— তা আবার নেই ? তুমি মোছলমানকে বেদ পড়াতে পার ? ভট্টাচাৰ্য্য তেমনি হাসিমুখে বলিলেন— কেন পারব না ? খুব পারি । তেমন নিষ্ঠাবান, ছাত্র যদি পাই আমার যন্ত বিদ্যা স্রোতের-ফুর ఇస్సిరి আছে সব আমি পরম আনন্দে তাকে শেখাতে পারি। 像 so নিবারণ একেবারে বজাহত। সে আর কোনো যুক্তি খুজিয়া না পাইয়া ভট্টাচাৰ্য্যকে ভয় দেখাইবার ভূবে বলিল-ন না না, ও-সব অনাচার ছেলেকে করিয়ে৷ ” না বলছি। মেলেচ্ছ পুরুত নিয়ে আমাদের চলবে না ! শেষে কি কুলপুবোহিত ত্যাগ করতে হবে নাকি ? ভট্টাচাৰ্য্য তেমনি হাসিমুথেই বলিলেন— কিছু করতে হবে না দাদা। সব ঠিক মানিয়ে যাবে। স্নেচ্ছেব উচ্ছিষ্ট-ভোজী যজমান নিয়ে পুরোহিতরা যখন চলছে, তখন কেবল মাত্র মেচ্ছের ভাষা মুখে উচ্চারণ কুরার জন্তে পুৰোহিতকে ত্যাগ করতে হবে না । সেটা তেমন অনাচার নয় । ভট্টাচার্য্যের এই কথার মধ্যে একটু শ্লেষ-ইঙ্গিত ছিল। নিবারণ মুখুয্যে আবাল্য নানাবিধ অনাচার করিয়া যৌবনে কমিসেরিয়েট বিভাগে কৰ্ম্ম গ্রহণ করে । লোকে বলে গোরাসৈনিকদিগের উচ্ছিষ্ট থানা নিবারণেব রসন পরিতৃপ্ত করিত। সেই অপবাদটা ঢাকিবার জন্ত নিবারণ এখন গ্রামের হিন্দুয়ানি রক্ষার ভার নিজের হাতে গ্রহণ করিয়াছে । ভট্টাচাৰ্য্য তাহার প্রকাগু হিন্দুয়ানির আড়ম্বরের আবরণ সত্ত্বেও নষ্ট লোকের রচা কথাটাকেই যখন ইঙ্গিতের খোচা দিয়া খুড়িয়া তুলিলেন, তখন নিবারণের মনের মধ্যে দ্বিতীয় রিপুট খোচাধাওয়া ভিমরুলের মতো ভন ভন করিয়া উঠিল। কিন্তু নিবারণ হলটা যথাসাধ্য গোপন রাখিয়া হতাশানস্র করুণস্বরে বলিল
পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩২১.djvu/২৯৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।