৩৮শ বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা o f to ৰুক্তি পাইবার আনন্দ সে বেদনাকে প্রবল হইয়ু উঠিতে দিতেছিল না । বিপিন কলিকাতায় আসিয়া বাহিরের সহিত প্রথম পরিচয়ে বাহিরকে লজ্জিত নববধূব মতে ভালো বাসিল ; কিন্তু সঙ্কোচে দে আপনাকে সম্পূর্ণভাবে “ বহিবকে দান করিতে পাবিল না । ইহা তাহার পক্ষে কল্যাণের কারণই হইল । বিপিনকে কলিকাতায় পাইয়া নবকিশোর ও বাচিয়া গেল । সে তারকের সঙ্গে অবিশ্রাম তর্ক করিতে করিতে যখন হাপাইয় উঠতু, তখন য়ে বিপিনের শান্ত স্নিগ্ধ আলাপে তৃপ্তি খুজিত । বিপিন নবকিশোরের ন্যায় তার্কিক নয়। সে চিবকাল পরের মতেই মত দিয়া অভ্যস্ত ; তাহার একমাত্র বন্ধু মলকিশোরের মত মানিয়া লওয়া সুতরাং তাহার পক্ষে বিশেষ কঠিন বোধ হইত না । তবু যে সে মধ্যে মধ্যে এক অধবার প্রতিবাদ করিত তাহ তাহার আবাল্যের সংস্কাব হইতে নবকিশোরের মত এখন একেবাবে স্বতন্ত্র হইয়া দাড়াইয়াছে বলিয়া ; কিন্তু ভিতরে ভিতরে তাহাৰ মত ও সংস্কার তাহার আবাল্যের পরিলেগু ছাড়াইয়া একেবারে নূতন প্রথে ছুটিয়াই চলিতেছিল। দুই বন্ধুতে নুতন মতের তর্কের চকমকি ঠুকিয়া মাঝে মাঝে আপনাদের চারিদিকে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ বর্ষণ করিয়া খেলা কবিত ; তাহাতে যে নিজেরই ঘরে আগুন লাগিতে পারে এমন আশঙ্কা কখনো কখনো তাইদের মনে হইলেও ঘরের আগুনে পথ পালো করিবার মোহ তাহাদিগকে খেপাইয়া ইণিত তাহাদের ভাবপ্রবণ তরুণ হৃদয় শাওনের ফুলকির মতনই স্বাধীন আনন্দের স্রোতের ফুল Woo Y উজ্জ্বলতায় ক্ষণে ক্ষণে আপনাদিগকে চারিদিকে বিকীর্ণ করিতে থাকিত ৷ ” ( t ) মথুৰাপুরের চৌধুরী-পরিবারে যখন বিপিনের খুড়িমার ঝুেনঝ মালতীকে আশ্রয় দিবীর ব্যাপার লইয়া গণ্ডগোল বাধিয়াছিল তখন নবকিশোব ও বিপিন দুই বন্ধু কলিকাতার বাসায় পরম নিশ্চিন্ত মনে রাস্তার ধূলা ও বাতাদেব ধোয় হইতে আরম্ভ করিয়া পুনর্জন্ম ও ঈশ্বরের অস্তিত্ব পর্য্যন্ত লষ্টয় পরম উৎসাহে আলোচনা করিতেছিল। এবং তাছাদের পবম অবজ্ঞাগজন চিরসহিষ্ণু নিত্যসহচর তারক তাহার মত কেহ গ্ৰাহ করুক আর না করুক সে বিষয়ে একেবারে ক্ৰক্ষেপ না করিয়া উভয় বন্ধুব তর্কের মাঝখানে পড়িয়া বাধা দিতে কিছুমাত্র অবহেল করিতেছিল না । இ. প্রাতঃকাল। শরতের সোনালি রৌদ্র খোলা জািনলা দিয়া ঘরের ফরাশে আসিয়া পড়িয়াছে ; ঘরের যেখানে যেখানে দেয়াল ফরাশের উপর সেখানে সেখানে. ছায়, আর জানলার ফঁাকে ফঁাকে সোনালি রৌদ্র, তাহার বুকে আবার গরীদের ছায়ার ডোরাকাটা ; যেন একখানি রৌদ্রছায়ার ডোরাকাট শতরঞ্জ বিছানে রহিয়াছে। জানলার নীচেই একটি শিউলি গাছের তলার ঝরাফুলে শারদলক্ষ্মীর শয্য, পাতা হইয়াছে ; শিউলি ফুলের মধু পরিমল স্নিগ্ধ বাতাসে স্পর্শ .ঝাইতেছে। ভিখারী করতাল বাজাইয়া মোটা ভাঙা গলায় গৃহস্থের দ্বারে দ্বারে আগমনী গান শুনাইয়া বেড়াইতেছে, এবং ভিক্ষ পাইলেই সমের অপেক্ষ না করিয়াই
পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩২১.djvu/৩০১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।