পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩২১.djvu/৩৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$8& শিশিটিতে কিছু অবশিষ্ট আছে কিনা দেখলেন, অকস্মাৎ তার হাতে কি উষ্ণস্পর্শ অনুভব করে চেয়ে রেখলেন, হেক্টরের ভগ্ন পিষ্ট । জামু হ’তে অজস্র ধারে রক্ত ঝরে পড়ছে। ব্যাপার কি বুঝতে বাকী রইল না। একদিন যাকে ভাইয়ের অধিক ভালবাসতেন, সেই বন্ধু তারি সম্মুখে, রক্তস্রাবে মারা যাচ্ছে, অথচ তিনি এমন নিরুপায় যে, একবিন্দু জল দিয়েও তাকে সাহায্য করতে পারছেন না। হেক্টর ঠিক তার সম্মুখে এবং তার মাথার একটু উপরের দিকেই শুয়েছিলেন—বোরিস হাত বাড়িয়ে সহজেই তার ক্ষতস্থানের সন্ধান পেলেন, ছিন্ন ধমনীটি চেপে ধরবামাত্র রক্তস্রাব বন্ধ হয়ে গেল। তার বুঝতে বিলম্ব হল না যে, যতক্ষণ যন্ত্রণ সহ করে, হেক্টরের ক্ষত জানুর ছিন্ন শিরা চেপে রাখতে পারবেন, ততক্ষণই তার প্রতিপক্ষের আয়ুষ্কাল। অপর কেহ হলে এ ব্যর্থ চেষ্টায় আপনাকে পীড়িত করত না, যে মৃত্যু অবশুম্ভাবী এবং সন্নিকট তাকে বারণ করা তার সাধ্যাতীত জেনে স্থির হয়ে থকৃত। জন্মমৃত্যুর সেই সন্ধিস্থলে অৰ্দ্ধপূর্ণ সেই ব্রাণ্ডি শিশিটির লোভ সম্বরণ করা অনেকেরি পক্ষে অসম্ভব হত, কিন্তু সেই অভিজাতবংশসস্তৃত, যথার্থ বীর, মহুদন্তঃ করণ বোরিস যে আদর্শে জীবনের প্রতি ক্ষুদ্র কাজ নিয়মিত করতেন, তার পক্ষে যা সহজ স্বেচ্ছায় মুহূৰ্ত্ত চিন্তা না করে করেছিলেন, সে কাজের ব্যতিক্রম করা স্বভাব-বিরুদ্ধ বলেই করতে পারেন নুি। শক্ৰ মিত্র কারো বিপন্ন অবস্থায় সুবিধা গ্রহণ করা তার পক্ষে সম্ভবপর ছিল না । সুর্য্য তখনও সমুজ্জলদীপ্তিতে আকাশে ভারতী শ্রাবণ, ১৩২১ বিরাজিত, তুষার ক্ষেত্র তখনও গতিশীল, একাধিক বার অন্ত তুষার ক্ষেত্রের সংঘর্ষে ভগ্নপ্রায় । প্রায়শই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়েছে—একবার সংঘর্ষ কিঞ্চিৎ সাংঘাতিক হওয়ায় একটি প্রকাণ্ড থও স্বতন্ত্র হয়ে ভেসে গেলে বারম্বার আঘাতে জমাট তুষারে যে ফাটল দেখা দিয়াছিল ক্রমশঃ বিস্তৃত হয়ে ভিন্ন হয়ে গেল ; বোরিস বলেন এর পরিণতি যে কি বেশ দেখতে পাচ্চি। একটু হাসলেন, যন্ত্রণায় সরল হাসিটুকু বাক হয়ে গেল। তারপর আপন মনে বলতে লাগলেন, দেখ ভাই বোরিস ষ্টানলুস্কিণ্ট। অনর্থক সরফরাজি কচ্ছে—কি করবে তার স্বভাবই ঐ—সবাই জানে সবাই বলে ডুবে মরার চেয়ে রক্তস্রাবে মরার বোধহয় যন্ত্রণ কমই হতে থারে। তবুও বোরিস হেক্টরের বিচ্ছিন্ন ধমনী হতে হাত সরিয়ে নিলেন, জমাট তুষার সেই একভাবে গলে গলে আকারে ক্রমশঃ ক্ষুদ্র হতে ক্ষুদ্রতর হয়ে গেল ! স্বৰ্য্য দেবেব রশ্মি সংযমন শিথিল হ’য়ে এল, তীব্র হিম বাতাসে চারিদিক হায় হায় করে উঠল, বোরিস শুননেল কে তার নাম ধরে ডাকছে, ফিরে চেয়ে দেখলেন, হেক্টর আরে প্রেভtষ্টর সংজ্ঞা আবার ফিরে এসেছে —এ আহবান তারই। বোরিস অবিলম্বে অথচ ভদ্রভাবে বল্পেন; আমি যুদ্ধের জন্ত প্রস্তুতই আছি কিন্তু তখনও হেক্টরের রুধির নিবারণের জন্ত ক্ষত স্থান যে চেপে ধরে রেখেছিলেন সে হাত সরিয়ে নিলেন না । হেক্টর সম্পূর্ণ শয়ান অবস্থা হতে কতকটা উঠে বসলেন, পূৰ্ব্বে কি হয়েছিল লে কথা