পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩২১.djvu/৩৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৮শ বর্ষ,"চতুর্থ সংখ্যা আৰ্য্যসভ্যতার এই একটি পূৰ্ব্বগৌরবকে অবহেলা করিয়া আমরা সত্যই লাভবান হইয়াছি না ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছি ? ইহা বিচার করিতে হইলে অতীতের মহাপুরুষ ও রমণীকুলরত্নদিগকে আদর্শস্বরূপ চক্ষের সম্মুখে ধরিতে হয়। o রামায়ণে স্বয়ম্বর বিবাহের বিশেষ উল্লেখ নাই । বীরত্বের পরিবর্তে কস্তাদান রীতিই রামায়ণের ক্ষত্রিয় সমাজে প্রচলিত । রাক্ষসগণ ও অসভ্য জাতিগণ প্রায় জোর করিয়াই বিবাহ করিত । মহাভারতে স্বেচ্ছাবিবাহের ভুরি ভুরি দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। আমাদের ললনাকুল মহিমা সাবিত্রীকে তাহার পিতা ইচ্ছামুরূপ পতি মনোনীত করিবার জন্ত দেশ পৰ্য্যটনে পাঠাইয়াছিলেন । দময়ন্তী আপনার ইচ্ছানুসারে পতিলাভ করিয়াছিলেন ; রুক্মিণী, ভদ্র, আরও কত শত কন্ত। স্বয়ম্বর হইয়াছেন। প্রকৃতপক্ষে বিবাহমাত্রেই প্রায় স্বেচ্ছ-বিবাহ বলিয়া মহাভারতে বর্ণিত হইয়াছে । জ্ঞান, প্রেম, ভক্তি যাহাতে ভারতীয় নারীকুলের মহিমা, স্বেচ্ছা-মিলন তাহার অন্ততম বিকাশ মাত্র । সে দিনও রাজপুতানায় এইরূপ মিলনের জন্ত এক একটা রাজ্য ধূলিসাৎ হইয়া গিয়াছে, এক একটি রমণীরত্ব পৃথিবীর ইতিহাসে চির অমরত্ব লাভ করিয়াছে । এ সকল ইতিহাস ত আর্য্য সভ্যতার গৌরবময় ইতিহাস, ভারতবর্ষ তখন হীন দাসত্ত্বের বোঝা বহিয়া কলঙ্কিত হয় নাই। আজ স্বেচ্ছা-বিবাহকে যুরোপীয় প্রথা বলিয়া, যদি আমরা অবহেলা করি • সেটা আমাদের পক্ষে একটি বিষম ভ্রম বলিয়া *भिशृगिऊ श्रव न कि ? স্বেচ্ছাবিবাহ 5 سواری কতদিন ভারতবর্ষ হইতে স্বেচ্ছাবিবাহ প্রথা লুপ্ত হইয়াছে জানি না।” তবে একভাবে অবরোধপ্রথাকে ইহার মৌলিক কারণ বলিয়া নির্দেশ করা যাইতে পারে । হিন্দুগন্ন অবরোধ প্রথাকে যদি বাধ্য হইয়া গ্রহণ করিয়া থাকেন, তবে স্বেচ্ছা-বিবাহের মূলোৎপাটন তাহারই আনুসঙ্গিক । এবং তাহা হইলে এই ঘটনা অধিক পুরাতন নহে । আর যদি অবরোধপ্রথা স্ত্রী-জাতির প্রতি পুরুষের ক্ষমতার অপব্যবহার জনিত হয়, তাহ হইলেও স্বেচ্ছ বিবাহের লোপ বেশী দিন পূৰ্ব্বে ঘটে . নাই। হিন্দুজাতির অধঃপতনের পূৰ্ব্বে যে এই সকল সামাজিক দুলক্ষণু দেখা দিয়া ছিল তাছা নিঃসন্দেহ । সে দিনকার রাজপুত ইতিহাসেও দেখিতে পাওয়া যায় রমণীগণ পুরুষের সহযোগে রণক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইয়াছেন, স্বামীপুত্রকে সহস্তে রণসজ্জা পরাইয়া দিয়াছেন। এ সকল কোনও ক্রমে অবরোধ প্রথার লক্ষণ নহে । যে দিন হইতে সমাজ দূষিত হইয়াছে, ভারতবর্ষের জাতীয় অধঃপতনেরও সেই দিন হইতেই সূত্রপাত হইয়াছে। আমি বিবাহ সমস্ত নামক, প্রবন্ধে বলিয়া ছিলাম, স্বেচ্ছা-বিবাহ প্রথা জাতীয়তার পক্ষে সহায়কর । পৃথিবীর মহাবীর, গুণী জ্ঞানীগণ এই মিলনের ফলস্বরূপ। ইহার সমর্থন কল্পে দু’একটি উদাহরণও উপস্থিত করিয়াছিলাম। অনেকে ইহ স্বীকার করিয়াও অন্তান্ত কয়েকটি তর্ক উত্থাপন করিয়াছেন। ইহঁাদের প্রথম তর্কের বিষয় এই যে, স্বেচ্ছ বিবাহ প্রথা প্রচলিত হইলে