পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩২১.djvu/৩৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ পরিচ্ছেদ জুজ-পরিবার। তখন সবেমাত্র প্রভাত হইয়াছে। নিত্যকার মত সেদিন প্রভাতেও পারির নিভৃত প্রাস্তরে অবস্থিত ক্ষুদ্র একখানি গৃহ হাস্ত আনন্দ-কলরবে ভরিয়া উঠিয়াছিল। “বাবা, আমার বাজনা আনতে ভুলে না ।” “জীর আমার পশম ।” “আজ কিন্তু আমার বোনবার কাটা আন চাইই, বাবা—“সেই সঙ্গে পিতার কণ্ঠও গুনা গেল । পিতা বলিল, “ইয়া, আমার ব্যাগটা দিয়ে যাও ত, মা—” t “বাবা, বাবা, রোজ তুমি ব্যাগ ভুলে যাবে! মাগো,—আর পারিও না আমি !” ইয়া ব্যাগ লইয়া আসিলে বৃদ্ধ জুজ, কস্তাগুলিকে যথেষ্ট ভরসা দিয়া বিদায় লইল । মেয়ের ছুটিয়া আসিয়া জানালার সম্মুখে দাড়াইল । জানাল দিয়া পথ দেখা যায় । সেই পথে জুজ যাইবে । তখনও মেয়েদের চোখের পাতে নিদ্রার জড়ত মাথানে ছিল, আলু খালু কেশ–বেশ একটি সহজ সরলতায় মুখগুলি সুন্দর দেখাষ্টতেছিল। চারিটি মেয়ে আসিয়া খড়খড়ির উপর বুক দিয়া বুকিয় দাড়াইল, বৃদ্ধ পিতাকে সস্নেহভাবে বিদায়-সন্তাষণ করিলা বৃদ্ধ পথে দাড়াইয় মৃদু হাসিয়া ফিরিয়া চাহিল। জুঞ্জ অফিসে চলিয়াছে। মেয়ের ছুটিয়া চারতলার ছাদে উঠিয়া আলিশায় ভর £, নবাব দিয়া বাপের পানে চাহিয়া রহিল—যতক্ষণ বাপকে দেখা যায় ! দূর হইতে বৃদ্ধ ছাদের পানে চাহিয়া দেখিলেন, দূর হইতেই উভয় পক্ষে চুম্বন-বিনিময় হইল। জুজ মোড় বাকিয় অদৃগু হইয়া গেল । বাস হইতে হাটিয়া চলিয়া হেমারলিঙ এও সম্সের অফিসে পৌঁছিতে জুজের ঠিক পয়তাল্লিশ মিনিট সময় লাগিত। পথটুকুও দীর্ঘ নহে, তবে জুজের গতি মৃদু ছিল। বেগে চলিলে বাতাস লাগিয়া গলায় মুন্দর বাধ৷ বো-টি পাছে ঈষৎ স্থানচ্যুত হয়, এই আশঙ্কায় জুজ কখনও বেগে চলিত না। এ বো মেয়ের কত যত্ন করিয়া বাধিয়া দিয়াছে ! কয়েক বৎসর হইল, জুজের পত্নীবিয়োগ হইয়াছে। শোকের উপব পাষাণ চাপ দিয়া এ কয়,বৎসর মেয়েদের জন্তই শুধু জুজ প্রাণ ধরিয়া আছে । মেয়ে ধ্যান, মেয়ে জ্ঞান, মেয়েগুলিকেই নাড়িয়া চড়িয়া, তাহদের সহিত সহস্র আদর-আব্দার করিয়াই বুদ্ধ আপনাকে কোনমতে থাড় রাখিঃাছিল । কল্পনা কিন্তু জুজের প্রতি অত্যাচার করিতে ছাড়িতন । অফিসের পথটুকু চলাফের করিবার সময় কল্পনা তাহার সন্মুখে আপনার মায়াজাল বিস্তার করিয়া ধরিত ! বৈদ্যুতিক পাখা যেমন ক্ষিপ্ৰ গতিতে ঘুরিতে থাকে, জুজের মাথার মধ্যে কল্পনাও তেমনি বেগে ঘুরিতে থাকিত। অফিসের একাউণ্টাণ্ট জুজ যখন অফিসের হিসাব-নিকাশ করিতে বসিত কল্পনা তখন সভরে দূরে