8億や উড়িয়া গিয়া বুঝি-বা আবার নীল-নিৰ্ম্মল আকাশ প্রকাশ পায় ইলাকে বাচাইবার উপায় হইয়াছে! রাত্রি-প্রভাতেই তাহার কাশী চলিয়া যাইবে । রঙ্গমঞ্চের দৃপ্তাবলীর পানে রমানাথ দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখিয়াছিল, কিন্তু তাহার মন সেখানে ছিল না । সে দেখিতেছিল, সেই অন্ধকার কক্ষে রুগ্ন-শয্যাশায়িনী ইলাকে সহসা তাহার চোখের সম্মুখে দৃশুপট পরিবৰ্ত্তিত হইয় গেল ! রমানাথ দেখিল, সমুথে নদী-নদীতে চন্দ্রচ্ছায়া-থর থর করিয়া কাপুতেছে! নদীতীরে ধু-ধু বালু– সে বালুরাশির শেষ নাই! নদীরও পারাপার নাই ! গাছ-পালা নাই ! নদীতে বালুতে আকাশে মিশিয়া সব এক হইয়া গিয়াছে ! ল্পমানাথ সেই নদীতীরে বালুক-সৈকতে #াড়াইয়৷ উৰ্দ্ধনেত্রে চাহিয়া আছে—অগ্নি উদ্ধে জ্যোতিৰ্ম্ময় আলোক-গোলকের মধ্যে হাসিমুখে দাড়াইয়া জ্যোতিৰ্ম্ময়ী ইলা। ইলা বলিতেছে, “এই দেখ, আমি আরাম হুইয়া গিয়াছি—রোগের যন্ত্রণ দারিদ্র্যের দুখ আর আমায়-স্পর্শ করিতে পারিতেছে না—এখানে স্নেহ প্রেম ভালবাসা সকলই আছে! শুধু কামনা নাই, নিরাশা নাই, প্রেমে বিচ্ছেদ নাই, সন্দেহ নাই, চাঞ্চল্য নাই! স্বচ্ছসলিলা তটিনীর মতই এ প্রেম পরিপূর্ণ। তুমি আসিবে কি ?” . রমানাথের তন্ত্রা ভাঙ্গিয়া গেল-চাহিয়া সে দেখিল, গভীর কোলাহলে “এনকোর” “এন্কোর” শব্দের সহিত পতিত ড্রপসিন খান আবার শূন্তে উঠিতে আরম্ভ করিয়াছে। " রমানাথ তাড়াতাড়ি সিড়ি দিয়া নামিতে ছিল। ম্যানেজার আসিয়া তাহাকে গ্রেফতার ভারতী t ভাদ্র, ১৩২১ করিলেন, কহিলেন, “অনেকগুলি বড়লোক আপনার সঙ্গে আলাপ করতে চান। বইথানার একরাত্রেই আশ্চৰ্য্য নাম হয়ে গেল, মশায়—এমন মণিকে কি না খনির গর্ভে লুকিয়ে রেখেছিলেন?” রমানাথের ব্যাকুল চিত্ত সেই অন্ধকার কক্ষে একখানি রুগ্ন মুখের কাছে তথন ছুটিয়া যাইতে চাহিতেছিল । তবু শিষ্টত-রক্ষার জন্ত বাধ্য হইয়া দুই পাচ জনের সহিত দুই একটা কথা কহিতে হইল । কহিয়াই সে তাড়াতাড়ি বাহির হইয়া পড়িল । 崇 桃 崇 কক্ষে দাড়াইয়া ব্যগ্র ব্যাকুল ডাকিল, “ইলা ।” কোন সাড়া অন্ধকার कt% ८ग , পাওয়া গেল না। রোগীর ঘুম ভাঙ্গানো যে অনুচিত, সে কথা উদ্বেগে যেন সে ভুলিয়া গিয়াছিল। ইলার নাম ধরিয়া ডাকিতে ডাকিত্তে সে অগ্রসর হইল। কেহ উত্তর দিল না। রমানাথ সহসা নিশ্চল হইয়া দাড়াইয়া , পড়িল । আনন্দে আশায় ভয়ের কোন কথাই তাহার মনে হয় নাই— ইলা ত এমন গাঢ় ঘুম কখনও ঘুমায় না। যখন ভাল ছিল, তথনও নয়। কাছে গিয়া ইলার গায়ে মাথায় হাত দিয়া রমানাথ দেখিল, কপাল ঠাও ছিম হইয়া গিয়াছে। তাহারও কপাল বহিয়া ঘাম ঝরিতেছিল, হাত পা ঠাও। অবশ হুইয়া আসিতেছিল। তাড়াতাড়ি জানালাটা সে খুলিয়া ফেলিল। ভোরের আলো ইলার বিবর্ণ মান মুখে, মুদ্রিত চোখে, শীর্ণ অধরে ছড়াইয়া পড়িল! শুকতারা নিম্প্রভ হইয়া উষার আরক্ত আলোক-আস্তরণের অন্তরালে - অদৃপ্ত হইয়া গিয়াছে। ভোরের
পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩২১.djvu/৪৫৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।