☾Ꮰy উপর উপন্যাস প্রকাশিত হইতে লাগিল আমার দেখিয়া বড়ই আনন্দ হুইত। আগে আমাদের বাড়ীতে অবরোধ প্রথা খুবই মানিয়া চলা হইত। মেয়েদের এবাড়ী ওবাড়ী যাইতে হইলেও ঘেরাটোপ ঢাকা পান্ধীতে চড়িয়া যাইতে হইত ; এবং পান্ধীর সঙ্গে সঙ্গে ২১ জন করিয়া দরোয়ান যাইত । যে সকল পুংস্ত্রীগণ গঙ্গাস্নানে যাইতেন, তাহাদিগকে পান্ধী কনিয়া লইয়া গির গঙ্গার জলে পান্ধী শুদ্ধ চুবাইয়া আনা হইত। কিন্তু মেজদাদা অবরোধ প্রথার উচ্ছেদকল্পে যে বীজ বপন করিয়াছিলেন, তাহার ফল ক্রমশ ফলিতে আরম্ভ করিল। ক্রমশ আমাদের অন্তঃপুরিকাগণের মধ্যে গাড়ীর চলন হইয় পড়ল। “স্বর্ণকুমারীর সঙ্গে যখন শ্ৰীযুক্ত জানকীনাথ ঘোষালের বিবাহ হয় তখন আমাদের অন্তঃপুরে আরও কিছু কিছু পরিবর্তন ঘটতে আরম্ভ হইল। পূৰ্ব্বে আমাদের గ్రా জানকীনাথ ঘোষাল छांझडौ আশ্বিন, ১৩২১ শুইবার ঘরে খাট বিছানা ছাড়া অন্ত কোনও তেমন আসবাব পত্র থাকিত না ; কিন্তু জানকী বাবু আসিয়াই তাহার ঘরটি নানাবিধ চৌকি কোঁচ কেদারায় অতি পরিপাটিরূপে যখন সজ্জিত করিলেন, তখন তাহার অমুকরণে আমাদের অন্তঃপুরের সমস্ত 'ঘরগুলিরই ঐ ফিরিল। মোটকথা অন্তঃপুরের সৌষ্ঠব বৰ্দ্ধিত হইল এযং বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হইয়া উঠিল। জানকী আমাদের পরিবারে আরও একটি নুতন জিনিষের প্রবর্তন করেন। সেটি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা। “অক্রুর চন্দ্র দত্তের বাড়ীর রাজেন্দ্রচন্দ্র দত্ত মহাশয়.কলিকাতায় তখন স্ববিখ্যাত arnateur হোমিওপ্যাখি-চিকিৎসক। তিনিই ডাক্তাব মহেন্দ্রলাল সরকার মহাশয়কে হোমিওপ্যাথি তন্ত্রে দীক্ষিত করেন । জানকী তাহাকে আমাদের বাড়ীতে লইয়া আসেন। রাজেন্দ্র বাবু এক রকম নুতন রায় আবিষ্কার করিয়াছিলেন, তাহার নাম “রাজভোগ।” র্তাহার নবাবিষ্কৃত এই রান্নাটি খাইতে ঔৎসুক্য, প্রকাশ করায় তিনি একদিন আমাদের বাড়ীতে তাহার উদ্যোগ করিয়া দিলেন । চাৎ ও ডাল চড়াইয়া, আমাদিগকে বলিলেন “এইবার তোমাদের যাহার যাহা ইচ্ছ, ইহাতে নিক্ষেপ কর” । এ কথায় আমরা কেউ আমসত্ব, কেউ তেঁতুল, কেউ श६, কেউ গুড়, কেউ লঙ্কা, কেউ রসগোল্লা প্রভৃতি যাহার যাহা ইচ্ছা হইল, অহাই দিলাম। আহ, সে যে কি উপাদেয় বস্তু প্রস্তুত হইয়াছিল, তাহ আর কর্তব্য নয় ! তাহারু সহিত আমরাও সারি বন্দি হইয়া “রাজভোগ" ভোজনে রলিয়া গেলাম,
পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩২১.djvu/৫৩৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।