পাতা:ভারতের অলিকসন্দর - সত্যচরণশাস্ত্রী.pdf/২৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮০
ভারতে অলিকসন্দর ।

দেন। চিরকাল প্রধূমিত হওয়া অপেক্ষা, একবার প্রজ্বলিত হইয়া ভস্মীভূত হওয়া সহস্রাংশে শ্রেয়স্কর বিবেচনা করিয়া, মুষিকগণের অধিপতি বিদেশী বন্ধন ছিন্ন ভিন্ন করিয়া অস্ত্রধারণ করেন। গ্রীক গ্রন্থকার বলেন, তিনি ব্রাহ্মণদের পরামর্শে অলিকসন্দরকে এদেশ হইতে দূর করিয়া দিবার জন্য, স্বদেশের সম্মান রক্ষার জন্য, ঘোরতর বিক্রমে যুদ্ধ করিয়াছিলেন। অলিকসন্দর, মুষিকপতির অভ্যুত্থানের কথা অবগত হইয়া, সেই প্রদেশের নবীন ছত্রপ (Satrap) পিথনকে উপযুক্ত সৈন্যসহ তাঁহাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। উভয় পক্ষে তুমুল সংগ্রামের অভিনয় হইল। যবন ও হিন্দু উভয়েই পরস্পরকে পরাভব করিবার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করিতে লাগিলেন। কুনৃপতির রাজ্য যেরূপ দুর্ভিক্ষ, মহামারি এবং দস্যু কর্তৃক প্রপীড়িত হয়[] সেইরূপ অলিকসন্দর বাহিনী, নগর সকলকে ধূলিসাৎ—দুর্ব্বলগণকে কৃতদাস, এবং যোদ্ধাগণকে ভূমিসাৎ করিয়াছিল। ভারতবাসীর হস্তে তাঁহারা কোন্ গতিকে প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, সে বিষয় বিদেশী গ্রন্থকার একেবারে নীরব, সুতরাং সে বিষয় আমরা কিছু বলিতে পারিলাম না। সেনানী পিথন, মুষিকপতি এবং অনেকগুলি ব্রাহ্মণকে হস্তগত করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। তাঁহাদিগকে বন্দী করিয়া অলিকসন্দরের সমীপে আনয়ন করিলে, তিনি হিন্দু বীরগণকে তাহাদের নগরে কীলকবিদ্ধ করিয়া হত্যা করিতে প্রেরণ করেন। এইরূপ কত শত ব্যক্তি যে, এইরূপে এই নশ্বর শরীর

  1. কু নৃপস্য যথারাজ্যং দুর্ভিক্ষব্যাধি তস্করৈঃ।
    দ্রাব্যতে তদ্বদাপন্ন পান্ডবৈস্তব বাহিনী॥

    মহাভরত, দ্রোণপর্ব্ব ৯৫ অঃ।