পাতা:ভারতের খনিজ - রাজশেখর বসু.pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভূসংস্থান

পরিবর্তিত হয়েছে, যেমন চুনেপাথর থেকে উৎপন্ন মারবেল, শেল থেকে উৎপন্ন স্লেট। আগ্নেয় শিলা যখন তপ্ত গলিত অবস্থা থেকে কঠিন হয় তখন তার অনেক উপাদান কেলাসিত হয়, অর্থাৎ মিছরি বা চিনির মতন দানা বাধে। যদি তরল শিলা শীঘ্র ঠাণ্ডা হয়ে জমে তবে পানা ছোট হয়, যদি ধীরে ধীরে জমে তবে দানা বড় হয়। পাললিক শিলা উৎপত্তির সময় জলের সমান্তরাল ভাবে স্তরে স্তরে বিন্যস্ত হয়, কিন্তু পরে ভূমির উত্থান-পতনের জন্য অনেক স্থলে স্তর বেঁকে যায়, ভাঁজ হয়, অথবা ভেঙে যায়। আগ্নেয় শিলা পাললিকের মতন স্তরিত হয় না। রূপান্তরিত শিলায় অনেক জ্বলে পূর্বের পাললিক স্তর বজায় থাকে এবং উত্তাপে গ'লে যাওয়ার ফলে অবস্থাবিশেষে কেলাসিত হয়। পাললিক শিলায় কেলাস উৎপন্ন হয় না ৷

৩। ভূসংস্থান

 কোথায় কোন্ অবস্থায কিরকম খনিজ পাওয়া যায় তার বিবরণের আগে ভারতবর্ষের ভূমির উৎপত্তি, প্রকৃতি ও গঠন সম্বন্ধে কিছু জানা দরকার। সংক্ষেপে তার আলোচনা করছি।

 ভারতের উত্তর অংশের নাম আর্যাবর্ত, দক্ষিণ অংশের নাম দক্ষিণাপথ (Deccan)। এই বিভাগ প্রাচীন কাল থেকে প্রসিদ্ধ আছে এবং এই দুই অংশের প্রাকৃতিক প্রভেদও সুস্পষ্ট।

 মসংহিতায একটি শ্লোকে আর্যাবর্তের উত্তম বিরণ দেওয়া আছে—

আসমুদ্রাপ্ত বৈ পূৰ্বাদাসমুদ্রাচ্চ পশ্চিমাৎ ।
হিমৰদৰিন্ধ্যরোমধ্যমার্যাবর্তং প্রচক্ষতে ॥

অর্থাৎ পূর্বসমুদ্র থেকে পশ্চিমসমুদ্র পর্যন্ত এবং হিমবান্ ও বিন্ধ্য পর্বতদ্বয়ের মধ্যবর্তী স্থানকে আর্যাবর্ত বলা হয়। ভারতের উত্তরবর্তী হিম/ 'য় গিরিশ্রেণীর শাখা পূর্বে আসামের প্রাক্ত দিয়ে ঠেকেছে, এবং পশ্চিমে আফগানিস্থান বেলুচিস্থানের প্রাপ্ত দিয়ে নেমে করাচির নেমে আরাকানের কাছে বঙ্গোপসাগরে