পাতা:ভারতের খনিজ - রাজশেখর বসু.pdf/৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

১। ভূমিকা

 Mineral শব্দের মৌলিক অর্থ— যা mine বা খনি থেকে পাওয়া যায়, কিন্তু সাধারণ প্রয়োগে এর অর্থ— স্বভাবজাত অজৈব (inorganic) ৰস্তু, যেমন মাটি বালি পাথর অভ্র সোনা হীরে ইত্যাদি। এই অর্থে mineralএর প্রতিশব্দ ‘খনিজ’। কাঠ হাড় জৈব (organic) বস্তু, ইট কাচ মানুষের তৈরি, সেজন্য এসব বস্তু খনিজ নয়। যে বস্তু মূলত উদ্‌ভিজ্ঞ বা প্রাণিজ কিন্তু বহুকালব্যাপী প্রাকৃতিক ক্রিয়ায় অত্যন্ত বদলে গেছে তাকেও খনিজ বলা হয়। যেমন পাথুরে কয়লা, যার উৎপত্তি অতি প্রাচীন যুগের গাছপালা থেকে খড়ি (chalk) এবং কয়েকপ্রকার চুনেপাথর (limestone), যা জলজ প্রাণীর কঙ্কাল থেকে উৎপন্ন হয়েছে; শালগ্রাম শিলা, যা একরকম অতিপ্রাচীন শামুক-জাতীয় (ammonite) জীবের শিলীভূত পরিণাম। কেরোসিন পেট্রল প্রভৃতির মূল বস্তু পেট্রোলিয়মও খনিজ। ভুবিজ্ঞানীরা অনুমান করেন এর উৎপত্তি জৈব পদার্থ থেকে, কিন্তু সেই আদি পদার্থ উদভিদ কি প্রাণীর ভা এখনও নিঃসন্দেহে স্থির হয় নি।

 ‘তৈল’ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ— যা তিল থেকে পাওয়া যায়। কিন্তু প্রচলিত অর্থটি ব্যাপক, সরষের তেল, তার্পিন, কেরোসিন সবই তৈল। বৈজ্ঞানিক ভাষায় ‘খনিজ' শব্দেরও একটু ব্যাপক অর্থ ধরতে হবে। খনিজ মাত্রই খনি থেকে খুঁড়ে বার করতে হয় এমন নয়। অনেক স্থানে ভূমির উপরেই খনিজ পাওয়া যায়। মাটি এবং জলও খনিজ ব'লে গণ্য হয়।

 Mineral শব্দের আর একটি বিশেষ বৈজ্ঞানিক অর্থ আছে, যথা— স্বভাবজাত অজৈব বস্তু যার রাসায়নিক উপাদান ও গঠন জুনিয়ত এবং অবস্থাবিশেষে যা কেলাসিত (crystallized) হয়, অর্থাৎ স্ফটিকের বা চিনির দানার মতন জ্যামিতিক আকার পায়। যেমন—স্ফটিক (rock crystal),