ঘটনাচক্রে আমাদের অবসাদের, দুর্ব্বলতার অবস্থা—এ রকম অবস্থা সকল উন্নত জাতির ভাগ্যেই একদিন না একদিন আসিয়া থাকে। কিন্তু তাই বলিয়া, আমরা যেন আমাদের শিক্ষাদীক্ষার স্বাতন্ত্র্যে আস্থা না হারাইয়া বসি। তাই বলিয়া এমন কিছু প্রমাণ হয় না যে, আমাদের আধ্যাত্মিকতা, আমাদের সাধনা, আমাদের আদর্শ সব ভুল,—সুতরাং আমাদের উচিত যেন-তেন প্রকারে আমাদের ব্যবহারিক জীবনকে ইউরোপের নাস্তিকতার, জড়বাদের ছাঁচে ঢালাই করিয়া ফেলা, আধ্যাত্মিকতা, ধর্ম্মসাধনা প্রভৃতি যাহা কিছু ভারতের ভারতত্ব, তাহা যৎসামান্য ভাবে পিছনে কোথাও শোভারূপে বসাইয়া রাখিলেই যথেষ্ট! বিগত ইউরোপীয় যুদ্ধ ইউরোপের পক্ষে একটা প্রলয়, কিন্তু তাহাতে প্রমাণ হয় কি যে ইউরোপের বিজ্ঞান, গণতন্ত্র, ক্রমপ্রগতি সব মায়া মরীচিকা—ইউরোপের উচিত আবার মধ্যযুগে যাওয়া অথবা চীনের কি তিব্বতের শিক্ষাদীক্ষাকে অনুকরণ করিয়া চলা? যাহারা ভাবিয়া দেখিতে চাহে না বা পারে না, বাহিরের দুই একটা অসংলগ্ন ঘটনা হইতেই যাহারা ত্বরিতে একটা সাধারণ সূত্র কষিয়া বসিতে চাহে, তাহারাই এমন অপসিদ্ধান্ত করিতে সু-পটু।
পাতা:ভারতের নবজন্ম - অরবিন্দ ঘোষ.pdf/১০৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতের নবজন্ম
১০১