আমাদের পর্ব্বতরাজির শিখর সব স্বপ্নের ভোজবাজীর মত কি মেঘের জঠর হইতে উঠিয়া পড়িয়াছে, মাটির উপর কি তাহাদের প্রতিষ্ঠা নাই? ভারতের অতীতের দিকে তাকাইয়া দেখ। আধ্যাত্মিকতার অব্যবহিত পরেই যে জিনিষটা চোখে পড়ে তাহা হইতেছে একটা বিরাট প্রাণশক্তি—জীবনে অফুরন্ত সামর্থ্যের আনন্দের খেলা, সৃজনকর্ম্মে একটা অসম্ভব রকম প্রাচুর্য্য। ন্যূনপক্ষে তিন হাজার বৎসর, বাস্তবিক কিন্তু আরও অনেক বেশী কাল, ধরিয়া ভারত-প্রতিভা অজস্র অনর্গল ভাবে দুই হাতে ফেলিয়া ছড়াইয়া নিত্যই নূতন নূতন পথে সৃষ্টি করিয়া গিয়াছে কত রকমারী রাষ্ট্র— গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র, রাজচক্রবর্ত্তী-তন্ত্র—কত দর্শন, বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য—কত মন্দির, স্মৃতিস্তম্ভ, ইষ্টাপূর্ত্ত,—ধর্ম্মসম্প্রদায়, সাধনামার্গ, শাস্ত্র, অনুষ্ঠান, বিধান, রাজনীতি, সমাজনীতি—ব্যবসা, বাণিজ্য, চিকিৎসা, ঐহিক পারত্রিক সকল রকম বিদ্যা-নাম করিয়া তাহার আর শেষ করা যায় না। আর ইহাদের প্রত্যেকটিতে সে যে কি পরিমাণ কর্ম্মঠতা দেখাইয়াছে, তাহার লেখাজোখা নাই। সৃষ্টি করিয়া চলিয়াছে ত সে সৃষ্টি করিয়াই চলিয়াছে,—তৃপ্তি নাই, শ্রান্তি নাই!
পাতা:ভারতের নবজন্ম - অরবিন্দ ঘোষ.pdf/১৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতের নবজন্ম
১৬