পাতা:ভারতের নবজন্ম - অরবিন্দ ঘোষ.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতের নবজন্ম

 কারণ, এই সময়েই ভারতের উপর আসিয়া পড়িল ইউরোপের বন্যা। সম্পূর্ণ বিভিন্ন, সম্পূর্ণ বিপরীত শিক্ষাদীক্ষার সহিত সংঘর্ষের প্রথম ফল হইল এই যে, প্রাচীন যাহা কিছুর আর বাঁচিয়া বর্ত্তিয়া থাকিবার সামর্থ্য ছিল না তাহা অধিকাংশই ধ্বংস হইয়া গেল, অনেকানেক জিনিষ গলিয়া নূতনের কুক্ষিগত হইল; বাকী যাহা রহিল তাহাদের জীবনীশক্তি ক্ষীণ হইয়া চলিল। সেই সাথে নূতন একটা কর্ম্মোদ্দীপনাও দেখা দিল বটে, কিন্তু প্রথম প্রথম তাহার লক্ষ্য হইল বিদেশী শিক্ষাদীক্ষার স্থূল বিশৃঙ্খল যেন তেন অনুকরণ। ভারতের পক্ষে সত্যই এ একটা ছিল দারুণ সঙ্কটের—ভীষণ অগ্নিপরীক্ষার মুহূর্ত্ত। তাহার প্রাণশক্তি যদি স্বভাবতঃই এতখানি প্রচুর ও সমর্থ না হইত, তবে একদিকে আপনকার পুরাতন আদর্শের মৃত ভার, আর একদিকে পরধর্ম্মের অন্ধ অনুকরণ, এই দুইদিকের চাপে সে প্রাণশক্তি যে নিষ্পিষ্ট হইয়া যাইত, লোপ পাইয়া বসিত, সেই সম্ভাবনাই ছিল বেশী। এই ধরণের অবস্থায় পড়িয়া এক একটা দেশ ও জাতি যে কি ভাবে উৎসন্ন যাইতে পারে, তাহার সাক্ষ্য ইতিহাসই দিয়াছে। কিন্তু ভারতের ভাগ্য, তাহার জীবনীশক্তি একেবারে লুপ্ত হইয়া যায় নাই;

৩৮