পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮২
ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা

ছিল। এই মঠপ্রথা এইরূপে একবার সুপ্রতিষ্ঠিত হইলে, পরে বৌদ্ধদের নিকট হইতে গোঁড়া হিন্দুগণ সেটি গ্রহণ করে, তবে সেরূপ সবিস্তার ব্যবস্থা নহে। এইরূপে গঠিত ধর্ম্মসম্প্রদায়গুলি যেখানেই প্রাচীন ব্রাহ্মণতন্ত্র অপেক্ষা প্রভাবশালী হইতে পারিয়াছিল—যেমন শঙ্করাচার্য্য কর্ত্তৃক সৃষ্ট সম্প্রদায়—সেইখানেই সেগুলি সমাজের সাধারণ অধিবাসিগণের ধর্ম্ম-সম্বন্ধীয় নেতা হইয়া উঠিয়াছিল, তবে তাহারা কখনই রাজনীতিক শক্তি অধিকার করিবার স্পর্দ্ধা করে নাই, এবং চার্চ্চ ও ষ্টেটের মধ্যে সংগ্রাম ভারতের রাষ্ট্রনীতিক ইতিহাসে কোথাও দেখিতে পাওয়া যায় না।

 অতএব স্পষ্টই বুঝা যাইতেছে যে, প্রাচীন ভারতের সমগ্র জীবন, বৃহৎ রাজ্য ও সাম্রাজ্যগুলির সময়েও, তাহার প্রাথমিক নীতি ও মূল কর্ম্মধারা বজায় রাখিয়াছিল, এবং তাহার সমাজ-রাষ্ট্রব্যবস্থা মূলতঃ ছিল স্ব-নিয়ন্ত্রিত স্বায়ত্তশাসনশীল সঙ্ঘসকল লইয়া গঠিত বহুমুখী জটিল সংস্থান। এই সংস্থানের উপরে সুসম্বদ্ধ ষ্টেট্-আধিপত্যের বিকাশ অন্যান্য স্থানের ন্যায় ভারতেও প্রয়োজন হইয়াছিল দুই কারণে; অংশতঃ এই কারণে যে, সমাজে স্বভাবতঃ যে শিথিল শৃঙ্খলা ও সঙ্গতি বিকশিত হয়, তাহা অল্পপরিসর জীবনের পক্ষে যথেষ্ট হইলেও, সমাজের বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কার্য্যকরী বুদ্ধি তাহাতে