পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় ঐক্যসাধন সমস্যা
১০৫

জীবন্ত রাষ্ট্রশরীরের মধ্যে সকলের ঐক্য সাধন করা। এমন এক রাষ্ট্রসংগঠন আবিষ্কার করা প্রয়োজন ছিল যাহা তাহার সকল অঙ্গের শান্তি ও ঐক্য রক্ষা করিবে, বাহ্য আক্রমণ হইতে নিরাপদতার সুব্যবস্থা করিবে, বা ভারতীয় সভ্যতা ও কৃষ্টির আত্মা ও শরীরের স্বচ্ছন্দ ক্রিয়া ও ক্রমবিকাশকে ঐক্যে ও বৈচিত্র্যে, অঙ্গীভূত সকল সাম্প্রদায়িক ও স্থানীয় অনুষ্ঠানের অপ্রতিহত ও কর্ম্মময় জীবনে, সম্পূর্ণতা প্রদান করিবে, ধর্ম্মকে বিরাট ও সমগ্র আয়তনে কার্য্য করিতে দিবে।

 ভারতের প্রাচীন মণীষা সমস্যাটিকে এই অর্থে ই বুঝিয়াছিল। পরবর্ত্তীকালের শাসনমূলক সাম্রাজ্য ইহাকে কেবল আংশিকভাবে গ্রহণ করে, কিন্তু তাহার ঝোঁক ছিল খুব ধীরে ধীরে এবং প্রায় অজ্ঞাতসারেই অধীনস্থ স্ব-তন্ত্র অনুষ্ঠানগুলিকে ধ্বংস করা না হউক, অন্ততঃ তাহাদের শক্তিকে ক্ষীণ ও দুর্ব্বল করিয়া দেওয়া,—সকল কেন্দ্রীকরণের চেষ্টাতেই এইরূপ ঝোঁক অবশ্যাম্ভাবী। ইহার পরিণাম হইয়াছিল এই যে, যখনই কেন্দ্রীর শক্তিটি দুর্ব্বল হইয়া পড়িত, তখনই ভারতের জাতীয় জীবনের মূলতঃ প্রয়োজনীয় প্রাদেশিক স্বা-তন্ত্র্যের চিরন্তণ নীতি পুনরায় মাথা তুলিয়া উঠিয়া কৃত্রিমভাবে প্রতিষ্ঠিত ঐক্যকে ক্ষুণ্ণ করিয়া দিত; কিন্তু তাহার দ্বারা যাহা হওয়া উচিত ছিল, সমগ্র জাতীর জীবনের গভীর সামঞ্জস্যসাধনে এবং