পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় ঐক্যসাধন সমস্যা
১১১

পূর্ব্বক যুধিষ্ঠিরের রাজসূয় যজ্ঞে যোগদান করিয়াছিল এই বলিয়া যে, যুধিষ্ঠির যাহা করিতেছেন তাহা ধর্ম্মেরই অনুশাসন। আর রামায়ণে আমরা দেখিতে পাই এইরূপই ধর্ম্মরাজ্যের, এক সুপ্রতিষ্ঠিত সর্ব্বব্যাপী সাম্রাজ্যের আদর্শ চিত্র। এখানেও সেটি স্বেচ্ছাচারী স্বৈরশাসন নহে, পরন্তু রাজধানীর, প্রদেশ সমূহের এবং সকল শ্রেণীর প্রতিনিধিস্বরূপ স্বাধীন জনসভা দ্বারা সমর্থিত সার্ব্বভৌম রাজতন্ত্র; তাহা ভারতীয় ব্যবস্থানুযায়ী সাম্প্রদায়িক স্বতন্ত্র অনুষ্ঠানগুলির সমন্বয়সাধক এবং ধর্ম্মের নীতি ও বিধানরক্ষক রাজতন্ত্র ষ্টেটেরই পরিবর্দ্ধিত রূপ। যে বিজয়ের আদর্শ প্রদর্শিত হইয়াছে তাহা বিজিত জনসমূহের জীবন্ত স্বাধীনতা হরণকারী, তাহাদের রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান সকলের বিলোপসাধনকারী এবং তাহাদের অর্থনীতিক সম্পদ শোষণকারী ধ্বংসপরায়ণ লুণ্ঠনাত্মক আক্রমণ নহে; পরন্তু তাহা এক যজ্ঞীয় যাত্রা (sacrificial progression), তাহাতে যে শক্তি-পরীক্ষা হইত তাহার ফলাফল সকলে সহজেই মানিয়া লইত, কারণ পরাজয়ের ফলে অবমাননা, দাসত্ব বা উৎপীড়নের সম্ভাবনা ছিল না; কেবল যে বিজয়ী শক্তির একমাত্র লক্ষ্য জাতির ও ধর্ম্মের প্রকাশ্য ঐক্য সাধন তাহার প্রতি আনুগত্যই দূরীভূত হইত। প্রাচীন ঋষিগণের আদর্শ এবং তাঁহাদের উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট; বুঝা যায় যে, দেশের বিচ্ছিন্ন ও কলহনিরত জনসমূহকে ঐক্যবদ্ধ