পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রাচীন ভারতে সমাজ ও রাষ্ট্র

করিতে হইলে প্রথমেই দেখিতে হয় যে, মানুষের ভিতরটিকে উন্নত করিতে, তাহার মন ও আত্মাকে উন্নত করিতে তাহার ক্ষমতা কতদূর, তথাপি সে সভ্যতা পূর্ণ হয় না, যদি সে বাহ্য জীবনকেও সুষ্ঠুভাবে গঠিত করিয়া ভিতরে ও বাহিরে সামঞ্জস্য রাখিতে না পারে। উন্নতি বলিতে ইহাই বুঝায়, শুধু উপরের জিনিষেরই উৎকর্ষসাধন করিলে চলিবে না, রাষ্ট্র, অর্থনীতি, সমাজনীতিকেও এমন ভাবে শক্ত-সমর্থ করিয়া তুলিতে হইবে, যাহাতে জাতি জীবন-সংগ্রামে টিকিতে পারে, কেবল ব্যক্তিগতভাবে নহে, কিন্তু জাতিগত ভাবে পূর্ণতার দিকে নিশ্চিতভাবে অগ্রসর হইতে পারে, এবং বাহিরের জীবনে এমন সজীবতা ও সবলতা থাকে, যেন তাহার মধ্যে আত্মা ও মনের ক্রিয়া ক্রমশঃ উন্নতভাবে প্রকাশিত হইতে পারে। যে সভ্যতা এই সকল উদ্দেশ্য সিদ্ধ করিতে পারে না, তাহার আদর্শ বা কার্য্য-কারিতার দোষ ও ত্রুটি রহিয়াছে, সে সভ্যতাকে পূর্ণাঙ্গ বলা চলে না।

 ভারতীয় সমাজের ভিতর ও বাহির যে সকল আদর্শের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হইত, তাহা ছিল অতি উচ্চ, সমাজ-শৃঙ্খলার ভিত্তি ছিল অতি সুদৃঢ়, ইহার মধ্যে যে তেজীয়ান্ প্রাণশক্তি ক্রিয়া করিত, তাহাতে ছিল অসাধারণ সৃষ্টিশক্তি ও ঐশ্বর্য্য; ভারত বাহিরের জীবনকে যে ভাবে গঠিত করিরাছিল, তাহাতে হইয়াছিল প্রাচুর্য্য, বৈষম্যের