পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা

এই industrialism ও parliamentarismএর আবির্ভাব কখনও হয় নাই, এ কথা সত্য। কিন্তু যখন লোকে কিছু ভাবিয়া চিন্তিয়া না দেখিয়াই য়ুরোপের এই দুইটি আদর্শের প্রসংশা করিত, সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থার চরম উৎকর্ষ বলিয়া মনে করিত, সে দিন আর নাই। ইহাদের দোষ-ত্রুটি এখন লোকলোচনে ধরা পড়িতেছে এবং ইহাদের মাপকাঠিতে কোন প্রাচ্য সভ্যতাকে পরিমাপ করিবার কোন প্রয়োজন নাই। য়ুরোপে প্রচলিত সাধারণতন্ত্র ও পার্লামেণ্টারি গবর্ণমেণ্টের শাসনতন্ত্র প্রাচীন ভারতেও ছিল, আমাদের অনুরূপ দেশের কেহ কেহ ইহা প্রমাণ করিতে চেষ্টা করিয়াছেন, কিন্তু এরূপ চেষ্টা ভ্রান্ত। প্রাচীন ভারতে সাধারণতন্ত্রের একটা ভাব খুবই প্রবল ছিল, তাহা কতকটা পার্লামেণ্টারি অনুষ্ঠানের মতই মনে হয় বটে, কিন্তু বস্তুতঃ তাহা ভারতের নিজস্ব এবং তাহা আদৌ বর্ত্তমান পার্লামেণ্টারিজ্‌ম্ বা সাধারণতন্ত্রের সদৃশ নহে। আর এই ভাবে যদি আমরা দেখি, তাহা হইলে প্রাচীন ভারতবাসী সমাজের মানসিক ও দৈহিক অবস্থার সহিত মিলাইয়া যে রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠন করিয়াছিল, তাহাতে তাহাদের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভার পরিচয় পাইয়া চমৎকৃত হইতে হয়, কিন্তু শিক্ষা-দীক্ষায় সম্পূর্ণ বিভিন্ন য়ুরোপের সহিত তুলনা করিয়া সে ব্যবস্থার প্রকৃত মর্য্যাদা বুঝা যায় না।