পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা

পুরোহিত, গুরু, বিধিকর্ত্তৃরূপে ব্রাহ্মণরা আশ্চর্য্য ক্ষমতা বিস্তার করিতেন বটে, কিন্তু প্রকৃত রাষ্ট্রশাসনের ভার কার্য্যতঃ রাজা, ক্ষত্ত্রিয় অভিজাতসম্প্রদায় এবং জনসাধারণের হস্তেই ন্যস্ত ছিল।

 কিছু কাল এক বিশেষ স্থান অধিকার করিয়াছিলেন ঋষি। উচ্চ অধ্যাত্ম-উপলব্ধি ও জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিই ঋষি, যে কোন শ্রেণী হইতে তাঁহার আবির্ভাব হইত, কিন্তু তিনি তাঁহার আধ্যাত্মিক চরিত্রের গুণে সকলের উপর আধিপত্য বিস্তার করিতেন, রাজা তাঁহাকে সম্মান করিতেন, তাঁহার পরামর্শ গ্রহণ করিতেন এবং সমাজের সেই অগঠিত অবস্থায় তিনি একাই সমাজের নূতন বিধি-ব্যবস্থার পরিবর্ত্তন ও বিকাশ করিতে সমর্থ হইতেন। ভারতীয় মনোবৃত্তির ইহা একটি বিশিষ্ট লক্ষণ যে, সকল কার্য্যে, এমন কি বাহ্যতম সামাজিক ও রাষ্ট্রনীতিক ব্যাপারেও ভারতবাসী আধ্যাত্মিক সার্থকতার দিকে, ধর্ম্মের প্রয়োজনীয়তার দিকে লক্ষ্য রাখিয়াছে, প্রত্যেক শ্রেণী ও সম্প্রদায়ের ধর্ম্ম কি, কর্ত্তব্য কি, অধ্যাত্ম-জীবনবিকাশে উপযোগিতা কি, তাহা স্পষ্টভাবে নির্দ্দিষ্ট করিতে চেষ্টা করিয়াছে। জাতির মনের উপর এই স্থায়ী ছাপ ঋষিগণই দিয়া গিয়াছিলেন; ভারতীয় সভ্যতা, ভারতবাসীর শিক্ষা-দীক্ষা, জীবনের ধারা যে ধর্ম্ম ও আধ্যাত্মিকতার উপরে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে, এবং জীবনের