পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রাচীন ভারতে সমাজ ও রাষ্ট্র
১৩

অনুষ্ঠানগুলি ঠিকভাবে পরিচালিত হইবে, তত দিন এরূপ একটি ক্ষুদ্র রাষ্ট্রও মগধ-রাজবংশের উদ্ধত সামরিক শক্তিকে প্রতিহত করিতে পারিবে। এই মতের আরও সমর্থন পাওয়া যায় ভারতের প্রাচীন রাষ্ট্রনীতিক গ্রন্থকারদের রচনায়, তাঁহাদের মতে,—গণতন্ত্র রাষ্ট্রের সহিত সখ্য স্থাপন করিলে রাজারা রাজনীতিক ও সামরিক ব্যাপারে যেমন সাহায্য পাইবেন, এমন আর অন্য কোথাও পাইবেন না; গণতন্ত্রকে দমন করিবার উপায় যুদ্ধ নহে, তাহাদের সহিত যুদ্ধে কৃতকার্যয় হওয়ার আশা অতি অল্প। তাহাদিগকে দমন করিতে হইলে কূট রাজনীতির আশ্রয় গ্রহণ করিতে হইবে, তাহাদের রাষ্ট্রতন্ত্রের ঐক্য ও দক্ষতা ভিতর হইতে নষ্ট করিয়া দিতে হইবে, নতুবা তাহাদিগকে দমন করা সহজ ব্যাপার নহে।

 ভারতের এই সকল গণতন্ত্র (Republics) বহু প্রাচীনকালে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল এবং খৃষ্টের জন্মের ছয় শত বৎসর পূর্ব্বে তেজের সহিত পরিচালিত হইতেছিল। অতএব, গ্রীস্ দেশে যখন ক্ষণস্থায়ী বিব্রত গণতন্ত্রের আবির্ভাব হয়, তখন ভারতবর্ষে এই সকল গণতন্ত্র প্রচলিত ছিল, এবং গ্রীসের গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা লুপ্ত হইবার বহুকাল পর পর্য্যন্ত ভারতে বর্ত্তমান ছিল। ভূমধ্যসাগরের তীরবর্ত্তী চপল অস্থিরমতি জাতিসকল অপেক্ষা প্রাচীন ভারতীয়গণ যে সুদৃঢ় ও স্থায়ী রাষ্ট্রগঠন-ব্যাপারে