পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রাচীন ভারতে সমাজ ও রাষ্ট্র
১৭

পরিচালিত করে, তাহাদের সমষ্টিকেই ভারতে সাধারণভাবে ধর্ম্ম বলা হয়। রাজা ছিলেন এই ধর্ম্মের সম্পূর্ণ অধীন। এই ধর্ম্মকে লোক অতি পবিত্র দৃষ্টিতে দেখিত এবং ইহার আধিপত্য নিত্য, সনাতন বলিয়া পরিগণিত হইত। মূলতঃ এই ধর্ম্মের কোনই পরিবর্ত্তন হইতে পারে না, তবে সমাজের ক্রমবিকাশে ইহার রূপের, বাহ্য আকারের যে পরিবর্ত্তন হয়, তাহাও স্বতঃই ভিতর হইতে স্বাভাবিকভাবেই হইয়া থাকে। দেশভেদে, কুলভেদে যে বিভিন্ন আচার-ব্যবহার, তাহাও এই মূল ধর্ম্মেরই অন্তর্গত। এই ধর্ম্মের উপর ইচ্ছামত হস্তক্ষেপ করিবার অধিকার কাহারও ছিল না। ব্রাহ্মণরাও ছিলেন এই ধর্ম্মের শিক্ষক, প্রচারক। ধর্ম্মকে তাঁহারা লিপিবদ্ধ করিয়া রাখিতেন মাত্র, কিন্তু তাঁহারা ধর্ম্মকে সৃষ্টি করিতে পারিতেন না। ইচ্ছামত ধর্ম্মের কোনরূপ পরিবর্ত্তন করিবার অধিকার তাঁহাদেরও ছিল না। তবে অবশ্য ইহাও স্বীকার্য্য যে, ধর্ম্মের ব্যাখ্যা করিবার অধিকার যখন তাঁহাদের ছিল, তখন তাঁহারা নিজস্ব ব্যাখ্যার দ্বারাই সমাজের নানা নূতন ভাব, নূতন চেষ্টার সমর্থন বা বিরোধিতা করিতে পারিতেন। রাজা ছিলেন ধর্ম্মের কেবল রক্ষক, পরিচালক, ভৃত্য। তাঁহার উপর ভার ছিল, যেন লোক ধর্ম্ম মানিয়া চলে, কেহ কোনও অপরাধ না করে, যেন বিষম বিশৃঙ্খলা বা ধর্ম্মভঙ্গ না