পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা

হয়। প্রথমে রাজাকে নিজেই সেই ধর্ম্ম মানিতে হইত, রাজা ব্যক্তিগতভাবে কিরূপ জীবন যাপন করিবেন এবং রাজপদ, রাজকার্য্যও কিরূপে পরিচালনা করিবেন, সে সম্বন্ধে ধর্ম্মের যাহা নির্দ্দেশ, রাজাকে কড়াকড়িভাবেই তাহা পালন করিতে হইত।

 রাজশক্তির পক্ষে এই যে ধর্ম্মের আনুগত্য, ইহা কেবল একটা বাস্তববর্জ্জিত কাল্পনিক আদর্শমাত্র ছিল না, কেবল কথার কথা ছিল না। কারণ, সমস্ত সমাজ-জীবন বস্তুতঃ ধর্ম্মের নির্দ্দেশ অনুসারেই পরিচালিত হইত। অতএব উহা ছিল জীবন্ত সত্য এবং সেই জন্যই রাজনীতিক ক্ষেত্রেও ইহার প্রভাব ছিল সমধিক। প্রথমতঃ, আইন প্রণয়ন করিবার কোন শক্তি রাজার ছিল না; দেশশাসনকার্য্যে রাজা যে সব আদেশ ও অনুশাসন প্রচার করিতেন, সে সব দেশের আধ্যাত্মিক, সামাজিক, রাজনীতিক, অর্থনীতিক রীতিনীতিরই অনুযায়ী হইত,—এমন কি, এই সব আদেশপ্রচারকার্য্যও রাজা একাকী করিতেন না। দেশের মধ্যে অন্যান্য এমন শক্তি ও অনুষ্ঠান ছিল, যাহারা রাজ্যশাসনব্যাপারে আদেশাদি প্রচার করিবার ক্ষমতায় রাজার সহিত অংশীদার ছিল—তাহা ছাড়া রাজা যে ভাবে দেশ শাসন করিতেন, ফলতঃ তাহা দেশবাসীর প্রকাশিত বা অপ্রকাশিত ইচ্ছা কর্ত্তৃক অনুমোদিত কি না, সব সময়েই রাজাকে সেই দিকে লক্ষ্য রাখিয়াই চলিতে হইত।