পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা

সদিচ্ছা বা ধর্ম্মবেত্তা ব্রাহ্মণগণের মত মাত্র ছিল না। রাজা নিজে ছিলেন প্রধান বিচারপতি, দেশের দেওয়ানী বা ফৌজদারী আইন অনুসারে দণ্ডাদি দিবার ব্যাপারে সকলের উপরে রাজারই আধিপত্য ছিল। তাঁহার বিচারপতিরা বা আইনে অভিজ্ঞ ব্রাহ্মণরা আইনের যে স্বরূপ নির্দ্ধারণ করিয়া দিতেন, সেই নির্দ্ধারণ যথাযথভাবে কার্য্যে পরিণত করিতে তিনি বাধ্য ছিলেন। মন্ত্রণাপরিষদে কেবল বিদেশীদের সহিত সম্পর্কে, সামরিক নীতি এবং যুদ্ধ ও শান্তিস্থাপন ব্যবস্থায় এবং বহু পরিচালন-মূলক্ কর্ম্মে রাজাই ছিলেন সর্ব্বেসর্ব্বা—সকলের উপরে। যে সব শাসনকর্য্যের দ্বারা সমাজের সাধারণ কল্যাণ হয়,—যেমন শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপন ও রক্ষণ এবং সামাজিক দুর্নীতি-নিবারণ,—এবং এইরূপ যে সব ব্যাপার রাজার দ্বারাই সুচারুভাবে পরিচালিত হইতে পারে, সেই সব ব্যাপারে ইচ্ছামত সুব্যবস্থা করিবার তাঁহার পূর্ণ অধিকার ছিল। ধর্ম্মের বিরুদ্ধে না যাইয়া তিনি কাহাকেও অনুগ্রহ, কাহাকেও নিগ্রহ করিতে পারিতেন, তবে যাহাতে জনসাধারণের সাধারণ কল্যাণ ও উন্নতি সাধিত হয়, একান্তভাবে সেই দিকে দৃষ্টি রাখিয়াই তাঁহাকে এই সব করিতে হইত।

 অতএব, প্রাচীন ভারতের রাষ্ট্রতন্ত্রে স্বেচ্ছাচারী রাজার খেয়াল বা অত্যাচারের কোন স্থান ছিল না; অন্যান্য অনেক দেশের ইতিহাসে রাজাদের যে পাশবিক নিষ্ঠুরতা,