পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রাচীন ভারতে সমাজ ও রাষ্ট্র
২৩

নৃশংস অত্যাচার সাধারণ ব্যাপার, ভারতের রাষ্ট্রতন্ত্রে তাহার সম্ভাবনা খুব কমই ছিল। তথাপি রাজার পক্ষে ধর্ম্মের অবমাননা করিয়া এবং রাজ্যশাসন ক্ষমতার অপব্যবহার করিয়া অত্যাচারী হইয়া উঠা অসম্ভব ছিল না। তাই আইন-কর্ত্তৃগণ এই অত্যাচারের প্রতিবিধানের ব্যবস্থা করিয়া রাখিয়াছিলেন। রাজপদের পবিত্রতা ও মর্য্যাদা সত্ত্বেও বিহিত হইয়াছিল যে, রাজা যখন যথাযথভাবে ধর্ম্মের অনুসরণ না করিবে, তখন তাহাকে মান্য করিতে প্রজারা বাধ্য নহে। মনু এমন পর্য্যন্ত ব্যবস্থা দিয়াছেন যে, ন্যায়-পরায়ণ অত্যাচারী রাজাকে পাগ্‌লা কুকুরের ন্যায়ই হত্যা করা প্রজাগণের কর্ত্তব্য। চরমক্ষেত্রে এই যে রাজদ্রোহ—এমন কি, রাজহত্যারও বিধান মনুর ন্যায় শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য গ্রন্থে বিহিত হইয়াছে, ইহা হইতেই বুঝা যায় যে, রাজাকে অবাধ ক্ষমতা দেওয়া এবং সকল অবস্থাতেই রাজার ভগবদ্দত্ত অধিকার স্বীকার করা ভারতীয় রাষ্ট্রীয় নীতির কোন বিধান নহে। এইরূপ বিদ্রোহের অধিকার প্রজারা যে কার্য্যে পরিণত করিয়াছিল, তাহার দৃষ্টান্ত আমরা সাহিত্যে এবং ইতিহাসেও দেখিতে পাই। আর একপ্রকার অধিকতর নিরুপদ্রব এবং আরও অধিক প্রচলিত পন্থা ছিল,—রাজ্য ছাড়িয়া চলিয়া যাইবার ভয়প্রদর্শন করা। অনেক ক্ষেত্রে ইহার দ্বারাই অত্যাচারী রাজার সদ্‌বুদ্ধি ফিরিয়া আসিত। সপ্তদশ শতাব্দীওে দক্ষিণদেশে