পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় রাষ্ট্রবিকাশের ধারা
৫৫

রাখিয়া ভারতের কম্যুন্যাল স্ব-নিয়ন্ত্রিত স্বাধীনতার মূলনীতিটি কতদূর কৃতকার্য্যতার সহিত প্রয়োগ করা হইয়াছিল, তাহাতেই ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভার প্রকৃত পরীক্ষা।

 এই প্রয়োজন সিদ্ধ করিবার জন্যই ভারতের মনীষা সুদৃঢ় চাতুর্ব্বর্ণ্যের বিকাশ করিয়াছিল; ঐ ব্যবস্থা ছিল একই সঙ্গে ধার্ম্মিক ও সামাজিক। বাহ্যতঃ দেখিলে মনে হইতে পারে বটে যে, এক সময়ে না এক সময়ে অধিকাংশ মানবসমাজই যে সুপরিচিত সমাজবিভাগের বিকাশ করিয়াছিল—পুরোহিত-সম্প্রদায়, যোদ্ধা ও রাষ্ট্রনীতিক অভিজাত-সম্প্রদায়, শিল্পী, স্বাধীন কৃষক ও বৈশ্য-সম্প্রদায় এবং দাস ও শ্রমিক-সম্প্রদায়—ভারতের চাতুর্ব্বর্ণ্য সেই রকমই একটা অপেক্ষাকৃত কড়াকড়ি ব্যবস্থা ভিন্ন আর কিছুই নহে। কিন্তু এই সাদৃশ্যটি শুধু বাহিরের, ভারতের যে চাতুর্ব্বর্ণ্য ব্যবস্থা, তাহার মূলগত সত্যটি ছিল বিভিন্ন। বৈদিক যুগের শেষভাগে এবং পরবর্ত্তী রামায়ণ-মহাভারতের যুগে চাতুর্ব্বর্ণ্য বিভাগটি ছিল একই সঙ্গে এবং অবিচ্ছিন্নভাবে সমাজের ধার্ম্মিক, সামাজিক, রাষ্ট্রনীতিক ও অর্থনীতিক কাঠামো। সেই কাঠামোর মধ্যে প্রত্যেক বর্ণের একটা নিজস্ব স্বাভাবিক স্থান ছিল, এবং সমাজের কোনও মূল প্রয়োজনীয় ব্যাপার ও কর্ম্মে কোন বর্ণেরই একচেটিয়া