পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২
ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা

ধীরে, কোথাও বা বিপ্লবের দ্বারা, ধনী ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায় প্রাধান্য লাভ করিয়াছে, এই বুর্জ্জোয়া শাসন সমাজকে শিল্পতান্ত্রিক (industrialised) করিয়া তুলিয়াছে এবং জনসাধারণের নামে দেশকে শাসন ও শোষণ করিয়াছে; অবশেষে এখন দেখা যাইতেছে, শ্রমিকশ্রেণী আধিপত্যলাভ করিবার উদ্যোগ করিতেছে। এইরূপ শ্রেণীর সহিত শ্রেণীর দ্বন্দ্ব ভারতের ইতিহাসে ঘটিতে পায় নাই। ভারতের মনোবৃত্তি ও প্রকৃতি পাশ্চাত্যের তুলনায় অধিকতর সমন্বয়শীল ও নমনীয়, পাশ্চাত্যের ন্যায় তর্কবুদ্ধিকে ধরিয়া না থাকিয়া বা শুধু প্রাণের আবেগে কাজ না করিয়া, তাহা সহজবোধ ও সহজানুভূতিরই বেশী অনুসরণ করিয়াছে; সেই জন্য, যদিও অবশ্য তাহা সমাজ ও রাষ্ট্রের আদর্শ ব্যবস্থা করিতে পারে নাই, তথাপি অন্ততঃপক্ষে তাহা দেশের সকল স্বাভাবিক শক্তি ও শ্রেণীর মধ্যে এমন একটা সুনিপুণ ও স্থায়ী সমন্বয়ে উপনীত হইতে পারিয়াছিল, যাহা সতত শঙ্কাজনকভাবে দোদুল্যমান সাম্য বা একটা সাময়িক আপোষমাত্র ছিল না। সেই প্রাণবান্ ও সুব্যবস্থিত যথাক্রম সন্নিবেশে সমাজ-শরীরের প্রত্যেক অঙ্গ স্বাধীনভাবে আপন আপন কর্ম্ম করিতে পাইত এবং এই জন্যই তাহা, মানুষের সকল সৃষ্টিরই কালক্রমে যে অবনতি অবশ্যম্ভাবী তাহা রোধ করিতে না পারিলেও,